পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১২ বঙ্গবিজেতা । রাজা টোডরমল্ল অক্ষম। মৌনভাবে মন্তক নত করিয়া চিন্তা করিতে লাগিলেন । ** "সাদীক খা বলিলেন, “ মহারাজ আপনি সেনাপতি, সেনাপতির ধৰ্ম্ম ভুলিবেন না, আপনি শাসনকৰ্ত্ত, শাসনকৰ্ত্তার ধৰ্ম্ম ভুলিবেন না, দোষীকে দণ্ডবিধান করুন ।” রাজা ধীরে ধীরে উত্তর করিলেন, “ ব্রাহ্মণ অবধ্য ।” * সুরেন্দ্রনাথ বলিলেন, “ এই বিধবা ও অনাথার আপনি ভিন্ন আর কেহ নাই, ইহাদের বিচার করুন, দোষীকে দণ্ড দিনৃ ।” রাজা ধীরে ধীরে উত্তর করিলেন, “ ব্রাহ্মণ অবধ্য ।” সভাসদগণ বলিল, “ মহারাজ, আপনি শিষ্টের পালন করিবেন, দুষ্টেয় দমন করিবেন, আপুনি না দিলে এই মহাপাপীর দণ্ড কে দিবে ?” রাজা ধীরে ধীরে উত্তর করিলেন, “ ব্রাহ্মণ অবধ্য ।” ইতিমধ্যে সেই সভার কিছু দূরে একটা অতিশয় গোলমাল হইয়া উঠিল। দেথিতে দেখিতে একজন দীর্ঘকায়, শীর্ণকলেবর, কৃষ্ণবর্ণ, মলিনবেশ পাগলিনী সেই সভার নিকট দৌড়াইয়া আসিল । চীৎকার শব্দ করিয়া ভূমিতে পতিত হইল! সে বিশ্বেশ্বরী পাগলিনী । শকুনি এতক্ষণ স্থিরভাবে ছিলেন, যখন তাহার মৃত্যুর আজ্ঞা হইয়াছিল, তখনও স্থিরভাবে ছিলেন, কিন্তু পাগলিনীকে দেখিয়। একেবারে কম্পিতকলেবর হইলেন। বলিতে লাগিলেন,~—“ আমি দোষী, আমি দোষী, আমার প্রাণবধ করুন, কিন্তু এ পাগলিনীর কথা শুনিবেন না ।” সকলেই বিস্মিত হইল । পাগলিনী পুনরার দণ্ডায়মান হইয়া বলিতে লাগিল,-- “ মহারাজ ! আমাকে রক্ষণ করুন ! পামর আমার মাতাকে বধ করিয়াছে, আমি তাহা স্বচক্ষে দেখিয়ছি, আমার মাতার বিকট আকৃতি এক্ষণও দেখিতে পাইতেছি, ঐ দেখুন তাহার ভীষণ আকৃতি, ঐ দেখুন আরক্ত নয়ন, ঐ”—আর কথা বাহির হইল না, শকুনির দিকে তাহার নয়ন পতিত হওয়াতে সহসী চীৎকার করিয়া মূচ্ছিত হইয়া পড়িল । সকলে যৎপরে নাস্তি বিস্মিত হইল । রাজার আজ্ঞার অনেক জলসেচনের পর পাগলিনীর সংজ্ঞা হইল। তথন তাহাকে পুনরায় সমস্ত কথা জিজ্ঞাসা করায় পাগলিনী রহিয়া রহিয়। আত্মবিবরণ কহিতে লাগিল । সেরূপ প্রকারে বলিতে হইলে অনেক বিলম্ব হইবে, সুতরাং আমরা পাগলিনীর কথা সংক্ষেপে যলিব । .