পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 বঙ্গ-গৌরব ‘বেঙ্গলি’ পত্রের এবং ঘোষ ভ্রাতৃগণের ‘অমৃতবাজার’ পত্রিকার সহিত প্ৰায় সারাজীবনই সংশ্লিষ্ট ছিলেন। র্তাহার অসাধারণ প্ৰতিভার জন্য লোকে তঁহার রাজনীতিক মতকে সর্বদাই শ্রদ্ধা করিত। জীবনের শেষ কয়েক বৎসর তাহার সহিত আর কোনো সংবাদপত্রেরই সম্পর্ক ছিল না। তিনি স্বদেশী যুগে যেমন অভূতপূর্ব সম্মান লাভ করিয়াছিলেন, মৃত্যুকালে তেমনই দেশের লোকের দৃষ্টির বাহিরে থাকিয়া অনাদৃতভাবেই চলিয়া গিয়াছেন। র্তাহার বাগ্নিতা তঁহাকে সমগ্ৰ ভারতে জনপ্রিয় কবিয়াছিল। কি ইংরেজি, কি বাংলা-ৰ্তাহার যে কোনো ভাষার বক্তৃতাই শ্রোতৃবৃন্দকে মুগ্ধ ও বিস্মিত করিত। র্তাহার ধর্ম সম্বন্ধীয় বক্তৃতাও যাহারা শুনিয়াছেন, তাহারা তঁহার অগাধ পণ্ডিত্যে চমৎকৃত না হইয়া থাকিতে পারেন নাই। তঁহার স্মৃতিশক্তিও অসাধারণ ছিল। বাংলার ইতিহাসে বিপিনচন্দ্রের নাম চিরদিন উজ্জ্বল স্বর্ণক্ষরে লিখিত থাকিবে।* মহারাজা মণীন্দ্ৰচন্দ্ৰ কাশিমবাজারের রাজবংশ* দানশীলতার জন্য ভারতবিখ্যাত। এই বংশের ধনসম্পদও যেমন প্রচুর, অর্থের সদব্যবহার কিরূপে করিতে হয় তাহাও পুরুষানুক্রমে এই বংশীয়গণের অধিগত। মহারাজা মণীন্দ্ৰচন্দ্ৰ নদীই এই বংশের দৌহিত্র-সস্তান হইয়াও উত্তরাধিকারসূত্রে বিষয়সম্পত্তির সহিত বংশগত দানশীলতারও অধিকারী হইয়াছিলেন। সাধারণের হিতকর কার্যে র্তাহার ধনাগারের দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত থাকিত। মুক্তহস্তে দান করিয়া তিনি বংশের গৌরব অক্ষুন্ন রাখিয়াছিলেন। ১২৬৭ সালের ২৮ জ্যৈষ্ঠ কলকাতা শ্যামবাজারে মহারাজা মণীন্দ্ৰচন্দ্রের জন্ম হয় (১৮৬০ খ্রিঃ)। তাহারা-পিতা নবীনচন্দ্ৰ নদীত কাশিমবাজার রাজবাড়ির জামাতা ছিলেন; মহারাজা লোকনাথ রায়ের পৌত্রী, রাজা হরনাথষ্ট রায়ের কন্যা গোবিন্দসুন্দরীর সহিত র্তাহার বিবাহ হয়। রাজা কৃষ্ণনাথ, হরনাথের একমাত্র পুত্র ছিলেন। কৃষ্ণনাথের পুত্ৰ ছিল না ; দুইটি মাত্র কন্যা জন্মিয়াছিল, তাহারা অকালে মারা যান। কৃষ্ণনাথের মৃত্যুর পর তাহার পত্নী মহারাণী স্বৰ্ণময়ী বিষয়াধিকারিণীত হন। দানশীলতার জন্য তিনি সমগ্র ভারতে খ্যাতিলাভ করেন এবং সরকার হইতে সম্মানলাভ করেন। কৃষ্ণনাথ পত্নীকে কিছু লেখাপড়া শিখাইয়াছিলেন, সেই শিক্ষাগুণে তিনি দেওয়ান রাজীবলোচন রায়ের সহায়তায় সুবৃহৎ জমিদারির কার্য পরিচালনা করিতেন। তিনি ব্ৰহ্মচারিণীর ন্যায় থাকিতেন। বিপিনচন্দ্রের মৃত্যু ২০.৫.১৯৩২