পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ অধ্যায়—কালিয়া।
১৭৯

মাছের এই প্রকারে কালিয়া বা শুষ্ক-কালিয়া (ঝাল-চড়চড়ী) রাঁধিবে। তবে মাছ অনুসারে কোনও মাছ অধিক কি কোনও মাছ অল্প কষাইয়া রাঁধিতে হইবে। যেমন-রুই, কাৎলা, কালবাউস, মৃগেল, মহাশোল, শোল প্রভৃতি একটু বেশী কষাইবে এবং ভেটকী, তুলাদণ্ডী, ইলিশ, চিতল, আইড়, গাগর, বাচা, রিঠা, বোয়াল, সিলঙ, মাগুর, কানচ, কৈ, চাঁদা, সুর, সরলী এবং চিঙড়ী প্রভৃতি অল্প মাত্র কষাইবে বা ঝোলে কাঁচাই ছাড়িবে। চিঙড়ী এবং তৈলাক্ত কোমল মাছ অধিক কষাইলে শক্ত হইয়া বিস্বাদ হইয়া যাইবে।

১১৪। রুই মাছের টিকলী-কালিয়া

 পাকা রুই মাছ কষাইয়া বা সিদ্ধ করিয়া কাঁটা বাছিয়া ফেলিয়া নুণ ও লঙ্কা বাটা সহ ছানিয়া লও। একটু চাউলের গুঁড়া মিশাইয়া মাছে বাঁধন দাও। টিকলীর আকারে গড়িয়া ঘৃতে বা তৈলে ভাজিয়া উঠাও। পুনঃ ঘৃতে জিরা, তেজপাত, লঙ্কা, গোটা গরম মশল্লা এবং রুচী হইলে হিং বা পেঁয়াজ ফোড়ন দিয়া লঙ্কা বাটা, ধয়িনা বটা, আদা বাটা, রশুন বাটা ও হলুদ বাটা ছাড়। কষাও। মশলা ভাজা ভাজা হইয়া সুগন্ধ বাহির হইলে, নুণ দিয়া অল্প জল দেও। ফুটিলে কষান আলু ও কাঁচা মটরশুটি (এবং কাঁচা বা কষান কিসমিস) ছাড়। সিদ্ধ হইলে ভাজা টিকলী ছাড়। জিরা-মরিচ বাটা, তেজপাত বাটা ও একটু চিনি মিশাও। পরে পিঠালী দিয়া ঝোল ঘন করিয়া নামাও। ঘৃত (রশুন বাটা, আদা বাটা) ও গরম মশলা বাটা মিশাও।

 একটু দধি বা তেঁতুল গোলা প্রভৃতি মিশাইয়া কালিয়া অম্ল স্বাদ বিশিষ্ট করিতে পার, অথবা নামাইবার পূর্ব্বে নারিকেল দুগ্ধ বা কুড়া, বাদাম বা পোস্ত বাটা অথবা মোয়াক্ষীর মিশাইয়া মালাইকালিয়া রাঁধিতে পার।

 কাৎলা, কালবাউস, মৃগেল, মহাশোল মাছের এই প্রকারে টিকলী কালিয়া রাঁধিবে।