পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৫৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

505 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খন্ড শিরোনাম উৎস তারিখ ৪৭। একজন গেরিলার যুদ্ধ গেরিলা প্রশিক্ষন কেন্দ্র, ত্রিপুরা ২৬ জুলাই, ১৯৭১ পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি চিঠি মাননীয় কমাণ্ডিং অফিসার, শ্রীনগর গেরিলা কেন্দ্র, ত্রিপুরা, ভারত। আমি (সি-২৫৬) ও অন্য একজন গেরিলা (সি-২৫৭) গত মাসে শ্রীনগর ট্রেনিং ক্যাম্প থেকে গেরিলা যুদ্ধের ট্রেনিং নিয়ে জুলাই মাসে দেধে ফিরি। আমরা জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে আমাদের উপর অর্পিত কার্যাদি সম্পন্ন করতে থাকি। এসব কার্যাবলীর মধ্যে আছে পাঞ্জাবী হানাদার সৈন্যের উপর গ্রেনেড আক্রমণ, পাক বাহিনীর দালাল খতম, নূতন গেরিলা সৃষ্টি। জনাব পাঞ্জাবী হানাদার বাহিনী খতম আমাদের গেরিলা অঞ্চল হল ঢাকা জিলার মনোহরদী থানার পূর্বাঞ্চল ও ময়মনসিংহ জেলার কটিয়াদী থানার কোতয়ালী অঞ্চল। এ অঞ্চলের উপর দিয়ে মাঝে মাঝে পাক হানাদার বাহিনীর সামরিক কলাম চলাচল করত। আমরা দেশে ফিরার পর থেকেই এদের উপর আক্রমণ করার পরিকল্পনা করতে থাকি। তারা মিঞা (সি-২৫৭)দের বাড়ীর কাছে নূতন একটি বাজার আছে, জনসাধারণ একে জয় বাংলা বাজার নামে ডাকে। জুলাই মাসের ২১ তারিখে ১০১ জন পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্য ও কিছু বাঙালী দালাল ও বন্দী ই,পি,আরসহ হানাদার বাহিনীর ১৬০ জনের মত লোক এই বাজারে হানা দেয়। হানাদার বাহিনী সকাল ৭টার সময় পৌছে সারাদিন কিছু লুটপাট করার পর তারা সন্ধ্যার সময় খাবার রান্না করতে থাকে। চারদিকে পাহারা বসিয়ে তারা নিশ্চিত মনে ঘোরাফেরা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজকর্মে ব্যস্ত থাকে। আমি (সি-২৫৬) ও তারা মিঞা (সি-২৫৭) সারাদিন থেকেই তাদেরকে আক্রমণ করার জন্য ঘুরতে থাকি। সন্ধ্যা ৭টার সময় অতি কষ্টে আমরা হানাদার বাহিনীর ৫০ গজের মধ্যে পৌছি কিন্তু তাদেরকে সুবিধামত পাওয়া যায় না। আবার রাত্র ৯টার দিকে তারা মিঞা (সি-২৫৭) ও আমি (সি-২৫৬) তাদের কাছে পৌঁছি। প্রথম তারা মিঞা তাদের উপর গ্রেনেড চার্য করে। সাথে সাথে আমি ও তারা মিঞা মোট চারবার তাদের ওপর গেনেড চার্য করি। গ্রেনেড চার্য করার পর আমরা সেখান থেকে বালভাবেই রিট্রিট করি। রাত্রেই দস্যরা গ্রামে আগুন দিতে থাকে। সকালের দিকে তারা মিঞা (সি-২৫৭) দের বাড়ী, তাদের আত্মীয় স্বজন ও চর মান্দালিয়া গ্রামের তাদের হাতে নিহত হয়। পরে লোকজনের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি যে হানাদার সৈন্যের মোট ২ জন নিহত ও দশবারজন আহত হয়। কাছে দালাল থাকায় ও বাজারের ঘর থাকায় এবং সৈন্যরা প্রথম আক্রমণের পর তারা পজিশন নিয়ে ফেলায় তাদের ক্ষতি কম হয়। পাক বাহিনীর দালাল খতম পাক সামরিক বাহিনীর গ্রাম থেকে যাওয়ার পর আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী অনুসন্ধান করে জানতে পারে যে তারা মিঞার (সি-২৫৭) গ্রামে (চর মান্দালিয়া) দসু্যদের আনার ব্যাপারে মনোহরদী থানার মুসলিম লীগের একজন নেতা ছিল। সে পূর্ব বাংলার প্রতারকদের মধ্যে অন্যতম। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জিলায় কখনও মিলিটারী