পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৬৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

665 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খন্ড শিলং থেকে ইউএনআইন্ডএর খবর- পূর্ব রণাঙ্গনে মুক্তিবাহিনী গত পাঁচ দিনে পাক সেনাদের অবস্থা সঙ্গীন করে তুলেছে। মুক্তিফৌজ গেরিলাদের আক্রমণে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা ময়মনসিংহ রেল পথ বিপর্যস্ত এবং শ্রীহট্টে একটি মালবাহী বিমান ভেঙ্গে অচল হয়ে গিয়েছে। সীমান্তের ওপার থেকে এবং বিশ্বস্ত সূত্রে এই খবর পাওয়া যায়। ওই সূত্রে আরও জানা যায় যে, গেরিলারা শ্রীহট্টে সামরিক বিমানবন্দরে ঝোপে জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে সাড়ে ৮ কোটি টাকা দামের একটি বিমানের উপর গুলি চালায়। বিমানটি সেই মাত্র রানওয়ে থেকে বড়জোর দুইশ গজ উচুতে উঠেছিল। গেরিলা বাহিনী ময়মনসিংহ জেলায় ৩১ জুলাই থেকে ২ আগষ্ট সামনাসামনি লড়াই চালিয়ে বহু পাকসেনাদের হতাহত করেন। ছাত্রনেতা সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গেরিলা বাহিনী সমগ্র টাঙ্গাইল জেলা নিজেদের কজার মধ্যে নিয়ে এসেছেন। রেল সংযোগ বিচ্ছিন্ন ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জের মধ্যেও রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন । তারা বৈদুতিক লাইন নষ্ট করে দেওয়ায় শ্রীহট্ট শহরের অর্ধেক অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। গেরিলা বাহিনী ৩১ জুলাই প্রথম কামালপুরে সামনাসামনি লড়াই শুরু করেন। তারা ১০ জন পাক সেনাকে আঘাত হানে এবং পাক সেনা ভরতি একটি ট্রেনের বগি আক্রমণ করে বহু পাক সেনাকে নিহত করেন। তাদের আক্রমণে দুটি রেল ইঞ্জিন, বেশ কয়েকটি ওয়াগন এবং যাত্রীবাহী কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই একই গেরিলা বাহিনী দুই দিন বাদে ২ আগষ্ট দেওয়ানগঞ্জ শহরে আক্রমণ করেন। যেখানে পাক ধ্বংস করে দেন। ওই আক্রমণ চালাবার সময় মুক্তিবাহিনীর দুজন জওয়ান আহত হন বলে জানা যায়। গেরিলা বাহিনী ৩৮ জন রাজাকারকে ধরে নিয়ে আসেন কিন্তু পালাবার চেষ্টা করায় ৩৬ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গেরিলাদের আক্রমণে সুনামগঞ্জে কপাকসেনাদের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। ওই এলাকার পাক সেনাদের ভারপ্রাপ্ত ক্যাপটেন মারাত্মকভাবে আহত হয়। তাকে চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টার করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। -আনন্দবাজার পত্রিকা, ৫ আগষ্ট ১৯৭১ 米 来 কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে পাঠানভপাঞ্জাবী সংঘর্ষ অনেকের আত্মসমর্পণ আগরতলা, ৭ই আগষ্ট (পিপিআই)- এখানে সীমান্তের ওপার থেকে প্রাপ্ত সংবাদে প্রকাশ গত ৩রা আগষ্ট ঢাকার কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে পঞ্জাবী এবং পাঠান সৈন্যদের মধ্যে এক প্রচন্ড সংঘর্ষে পাক বাহিনীর দুজন কর্নেল এবং আরও কয়েকজন পাক সৈন্য নিহত হয়েছে। সংবাদে বলা হয়েছে, ঐ দিনই মুক্তিবাহিনী ফেনী সেক্টরে করের হাটে পাক সৈন্যর ওপর আক্রমণ চালিয়ে একজন মেজর, দুজন ক্যাপ্টেন এবং দুজন নন কমিশনড অফিসারসহ ৪২ জন পাকিস্তানী সৈন্যকে খতম করেছে। সংঘর্ষে ৫৫ জন রাজাকারও নিহত হয়েছে। পাঁচ ঘন্টা ধরে এই সংঘর্ষ চলে। গত ৪ঠা এবং ৫ই আগষ্ট নারায়ণপুর রেলওয়ে ষ্টেশনের নিকট কয়েক দফা সংঘর্ষে ৪০ জন পাক সৈন্য মুক্তিফৌজের হাতে নিহত হয়েছে। মুক্তিবাহিনীর তিনজন নিহত হয়েছে।