পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



731

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র: একাদশ খণ্ড

পেরে ২৮ জন রাজাকার অস্ত্রসহ গেরিলাদের কাছে আত্মসমৰ্পন করে। গেরিলারা ট্রেনের সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র হস্তগত করে ট্রেনটিকেও বিধ্বস্ত করে ফেলেন। পুলটি বিধ্বস্ত হওয়ায় ঢাকা ময়মনসিংহ ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে লড়েছে।

গ্রেনেড বিস্ফোরণ

 ময়মনসিংহ-গত ৯ই কার্তিক ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র গ্রেনেড নিক্ষেপ করে কয়েকজন পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদারভ খতম করেছেন।

 আমাদের ঢাকাস্থ প্রতিনিধি জানিয়েছেন গত ২৬শে আশ্বিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে একজন দুঃসাহসী মুক্তিসেনা গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। প্রচণ্ড শব্দে গ্রেনেডটি বিস্ফোরিত হওয়ায় ক্লাসে যোগদানরত ছাত্রদের মনে দারুণ ভীতির সঞ্চার হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন থানায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাফল্য

কিশোরগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা মুক্ত

 গত ২২ শে আশ্বিন শনিবার থেকে ২৭শে আশ্বিন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের চারিদিকে আবিরাম যুদ্ধ করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা এক বিস্তীর্ণ এলাকা মুক্ত করেছেন। শুধুমাত্র কিশোরগঞ্জ শহর ব্যতীত মহকুমার অন্যসব জায়গাই স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়তে দেখা যায়। মুক্তিযোদ্ধারা শহরের নিকটবর্তী মৌলানা আব্দুল হালিমের বাড়ীতে ক্যাম্প করে খোলাখুলি চলাফেরা করেছেন।

দ্রুত পলায়ন

 কালিয়াকৈর থানার ফুলবাড়ীয়া থেকে অধিনায়ক আফছার ও বীর কাদেরের আগমন সংবাদ শুনে পাক দস্যর দলটি দ্রুত পলায়ন করে। ফুলবাড়ীয়া এখন আবার মুক্ত হল।

পুল বিধ্বস্ত

 ২৯ শে অক্টোবর মুক্তিবাহিনীর দুর্ধর্ষ বীর গেরিলাগণ কালিয়াকৈর থানার ফুলবাড়ীয়ার পূর্ব-উত্তর কোনার হাটুভাঙ্গার লোহার পুলটা ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেন। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, ঐ দিন দস্য হানাদার বাহিনী শ্রীপুর হতে ঐ রাস্তা ধরে ফুলবাড়ীয়ায় আসছিল। 

-জাগ্রত বাংলা, ৩০ আক্টোবর, ১৯৭১
* * * * * * * * *

সাবাস!

 ১২ই অক্টোবর। নীলফামারী হইতে একটি ট্রেন সৈয়দপুরের দিকে যাইতেছে। ট্রেনের একটি কামরায় তিনজন বন্দী গেরিলা, হাতে ও কোমরে শক্ত দড়ি দিয়ে বাঁধা, প্রহরায় দুইজন হানাদার পাক সেনা।

 মুক্তিসংগ্রামী গেরিলা তিনজন একদিন পূর্বে ডিমলা থানায় শত্রর হাতে ধরা পড়িয়াছেন। প্রাতমিক নিপীড়নের পর তাঁহাদিগকে সৈয়দপুর ক্যাণ্টনমেণ্টে লইয়া যাওয়া হইতেছিল। চলন্ত ট্রেন। যাত্রীরা নির্বাক।

 হঠাৎ যাত্রীদের মধ্য হইতে কয়েকজন প্রহরারত পাক সেনাদের উপর ঝাঁপাইয়া পড়িয়া তাহাদের অস্ত্র কাড়িয়া নেয়। গেরিলারা হাতের বাঁধন খুলিয়া দেয়।