পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৭৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

706 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ২৭২ স্বাধীনতা সংগ্রামী কালান্তর ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ বাংলাদেশের পাশে পশ্চিম বাংলা স্বাধীনতা সংগ্রামী বাংলাদেশের পাশে পশ্চিম বাংলা কমল সমাজদ্বার ংলাদেশের জনগণের উপর প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সৈন্য বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের সংবাদে পশ্চিম বাংলার মানুষ স্তম্ভিত হয়ে গেছেন। কেবলমাত্র বাংলাদেশের পাশে পশ্চিমবাংলা অবস্থিত বলেই নয়বা এই দেশের জনগণের আত্মীয়-পরিজন বাংলাদেশে আছেন বলেই নয়-এই দেশের জনগণ বিগত কয়েক বছর ধরে সানন্দ বিস্ময়ে পূর্ব বাংলার জনগণের সর্বতোমুখীন জনগণের বিকাশ লক্ষ্য করছিলেন। সে দেশের মানুষ সে দেশের শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতিতে ব্যাপক উজ্জীবন পশ্চিম বাংলার মানুষের নিবিড় কৌতুহলের বিষয় হয়ে উঠেছিল। তাই সে দেশের মানুষের উপর ফৌজী শাসনের মদমত্ত অত্যাচারের পশ্চিম বাংলার মানুষ স্থির থাকতে পারেনি। পচিশে মার্চের সেই কাল রাতের পর প্রায় এক পক্ষকাল অতিবাহিত হয়ে গেল। এই সময়ের মধ্যে অসংখ্য সভা শোভাযাত্রার মাধ্যমে পশ্চিম বাংলার মানুষ সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে। কয়েকটি কমিটি গঠিত হয়েছে বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক সংগ্রামে সর্বতোমুখী সাহায্যের জন্য। ংলাদেশে ইয়াহিয়ার ফৌজবাহিনীর আক্রমণের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরই কমিউনিষ্ট পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিষদের সম্পাদকমন্ডলীর পক্ষে শ্ৰী বিশ্বনাথ মুখাজী এক বৃিবৃতি মারফত সভা সমাবেশ মিছিল করে বাংলা দেশের স্বাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামের প্রতি সৌভ্রাতৃত্ব জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে পশ্চিম বাংলার মানুষের প্রতি আহবান জানান। বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশন, ডি এস ও, ছাত্র পরিষদ (নব কংগ্রেস) প্রভৃতি ছাত্র সংগঠনগুলির আহবানে গত ২৭ মার্চ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এক সর্বাত্মক হরতাল হয়। এদিনই পশ্চিমবঙ্গ যুব সংঘ ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশন বাংলাদেশ-এর ঐতিহাসিক সংগ্রামের প্রতি আন্তরিক সংহতি জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে ষ্টুডেন্টস হলে এক যুব ছাত্র সমাবেশ আহবান করেন এবং সমাবেশের পরে এক যুব ছাত্র মিছিল কলকাতার বিভিন্ন রাজপথ প্রদক্ষিণ করে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সংগ্রামের প্রতি রক্তিম অভিবাদন জানান। বি পি টি ইউ সি-র সম্পাদক শ্রী ভবানী রায় চৌধুরী ও টি এন সিদ্ধান্ত এক বিবৃতিতে বলেনঃ ংলাদেশের মানুষের উপর বিনা প্ররোচনায় যে পাশব সামরিক হামলা শুরু হয়েছে বি পি টি ইউ সি তার বিরুদ্ধে তীব্র ক্রোধ প্রকাশ করেছে। এ বি টি এ কো-অর্ডিনেশন কমিটি এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের সংগ্রামী জনগণকে বিপ্লবী অভিনন্দন জানান। জীবনবীমা কর্মচারী সমিতি (পূর্বাঞ্চল) যুগ সম্পাদক শ্রী সুকুমার মুখাজী বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সমর্থনে এক বিবৃতি দেন। গত ২৮ মার্চ শহীদ মিনার ময়দানে এক বহুদলীয় সমাবেশে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক গণঅভ্যখানের প্রতি পূর্ণ সংহতি জানিয়ে এই প্রত্যয় ঘোষণা করা হয় যে, সামরিক স্বৈরাচারের নৃশংস নিপীড়ন প্রতিহত করে অনতিবিলম্বেই পূর্ব বাংলার মৃত্যুঞ্জয়ী জনগণ সার্বিক স্বাধিকার অর্জন করবেন। রাজ্য বন কংগ্রেস সভাপতি শ্ৰী বিজয় সিং নাহার-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় শ্রী অজয় মুখোপাধ্যায় প্রভৃতি বক্তৃতা দেন।