পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
রূপবিদ্যা
২৬৭

ধীশক্তি প্রতিভার আলোর অনুগামী এবং ধীশক্তির অনুগামী নিপুণতা প্রভৃতি কতকগুলি। আলঙ্কারিকরা এইজন্য বলেছেন—শক্তিনিপুণতা লোকশাস্ত্রকাব্যান্তবেক্ষণাৎ কাব্যঞ্চ শিক্ষয়াভ্যাস ইতি হতুসমূদ্ভবে। প্রতিভার সঙ্গে ধীশক্তি নিপুণতা লোকশাস্ত্র ও কাব্যাদির আবেক্ষণ কবিজনের নিকটু শিক্ষা এবং অভ্যাস—এতগুলো ব্যাপার জুড়ে থাকে, তবে হয় রূপবিদ মানুষ । প্রতিভা হ’ল অতৈলপুর প্রদীপ, দৈবাৎ কোন কোন মানুষ আসে রূপের জগতে সেটি বহন করে এক কালের থেকে আর এক কালের মধ্যে জ্ঞান-অজ্ঞান উৎকর্ষ-অনুৎকর্ষ আচার-অনাচার সমস্তর হিসাব মিটিয়ে নতুন পথে চালিয়ে নিতে মানুষকে। প্রতিভাবান নতুন পথ খুলে দিয়ে গেল, মানুষের চিন্তাস্রোত সেই ধারার অনুসরণে চল্লেী যুগ যুগ ধরে নতুন নতুন রূপ-স্মৃষ্টির পথে । বাঙলা ভাষার সঙ্গে যার একটু মাত্র পরিচয় আছে সেই জানে বাঙলা গদ্য পদ্য এ দুয়ের মধ্যে এক এক প্রতিভাবানের পরিচয় কি ভাবে সুস্পষ্ট ধরা রয়েছে—ছন্দের দিকে বর্ণনার ধরণ-ধারণ সমস্তেরই দিকে । ভাব-প্রকাশের বাধা সমস্ত প্রতিভাবান কাব্য ও সাহিত্যের দিক দিয়ে কালে কালে যেমন দূর করে চলেছেন, তেমনি সব প্রতিতাবানের আসা যাওয়া চিত্রকলা সঙ্গীতকলার বেলাতেও ঘটছে এবং ঘটে গেছে কালে কালে । প্রতিভাবান নতুন নতুন যে পথ স্বজন করে তার সঙ্গে যার কোনো প্রতিভা নেই কিন্তু একটা কিছু নতুনতরো কাণ্ড করে বসলো তার কর্মে তফাৎ রয়েছে । কবি বাল্মীকির প্রতিভা যখন সাতকাণ্ড রামায়ণ স্বষ্টি করলে তখন কাব্যজগতে একটা নতুন রসের পথ খুল্লো, কালিদাসের মেঘদূত’ ‘শকুন্তলা’ সেখানেও নতুন রসের ধারা ঝরলে রূপ-জগতে ; তারপর এল কবির লড়াইয়ের কালে ভ্রমর-দূত হংস-দূত এমনি কত দূত তার ঠিক নেই, কিন্তু কোনো দূত পাচালী কোন দূত ছড়া কেটেই চলে গেল,—নতুন ফুল ফুটলে না কাব্যজগতে, নতুন পথও খুল্লো না নতুন যুগের। বৈষ্ণব কবির এলেন, প্রতিতার স্পর্শে নতুন ছন্দে বেজে উঠলে কাব্যলক্ষ্মীর নূপুর-কঙ্কণ। এক কবির সঙ্গে অন্ত কবির কাযের খুটিনাটি হিসেব নিয়ে দেখলে