পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৮৮
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

সুন্দরী বোধ হ'ল ; আর্টিষ্ট যথার্থই অস্ত্রখানিকে বীরের বামারূপে গড়ে গেছে—তৰী শ্বামী ঝকঝকে মূর্তিখানি মন্দিরের চূড়াগুলো যদি ভাল, করে দেখা যায় তবে পর্বতের সাদৃশ্ব চমৎকার পাই তাতে,—কোন গোপুরম দেবতা মানুষ পশু পক্ষী ইত্যাদি নিয়ে বিরাট যেন বিন্ধ্যাচলম্ কি সীমাচলম, কোনটা বা বরফ-ঢাকা পাহাড়ের মতো সাদাসিধে রূপখানি,—মন্দিরচুড়া কি প্রাসাদচুড়াকে পর্বতের সঙ্গে টেনেবুনে .মিলিয়ে দেখতে হয় না, সহজেই দেখি আমরা। দৃশ্য বস্তুর মর্যাদা বুঝে’ যে উপমা দিতে পারে সেই হ’ল সুকৌশলী। কবি কালিদাসু উপমার ওস্তাদ ছিলেন, তাইতো বলে থাকি—"উপম * কালিদুসস্ত। এখন বলতে পারি, কালিদাস থেকে স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র উপমা না দিয়ে 'কালিদাসকেই চিরকাল সব কবিই উপমা টানার বেলায় অনুসরণ করবে কেন ? পুরাকালে নতুন নতুন উপমা সৃষ্টি করার স্বাধীনত কালিদাসেরও ছিল, এখানকার মানুষদেরও আছে একালে, এটা সত্য কথা । কিন্তু এখানেও কবিপ্রৌঢ়োক্তির কাজ আছে, সীমা টান চাই কবিতে অকবিতে উপমার দিক থেকে, অকবি শুধু নতুন এই জোরে তো যা তা উপমা দিয়ে খালাস পেয়ে যেতে পারে না। এই কারণে পণ্ডিতেরা বলেন যে কিছু উপমা বা অলঙ্কার তা কবিপ্রৌঢ়োক্তিসিদ্ধ হ’ল তো চল্লো কাজ ; কবির উক্তি পুরোনো কি নতুন এ কথা নয়। যে কবি নয় সে ফস্ काई यनि উপমা দেয় যে তাজমহলটি দেখছি যেন মুণ্ডি সন্দেশ, কি তাজের গম্বুজট যেন দেখাচ্ছে, চার চারটে বাণবিদ্ধ মরুঞ্চে চাদের শ্বেতহরিণীর নিটোল স্তনটি, তবে কোথায় গিয়ে দাড়াবে যে সাদৃশ্বকরণের শিল্প তার কিছুই ঠিক থাকে না, এবং ভুল উপমা দোষদুষ্ট উপম ক্লিষ্ট উপমা অপকৃষ্ট উপমা নিভুল উপমা উৎকৃষ্ট উপমা বেরসিকের উপমা সুরসিকের উপমা, —এসব কিছুর কোন মূল্য থাকে না, কানাকড়িও ষোলকড়ার সমান ধারাতে চলে । - একই রকমে দেখতে বলেই ষোড়শকলায় পূর্ণ চাদের সঙ্গে চাদা মাছের সাদৃশুও উপমা দিলে ভাল বলতে পারিনে। ভেকের মকমকী তাকে মনোমত করে দিতে হ’লে যে সদৃশকরণের কৌশল ও রসজ্ঞান থাক। দরকার তা তো সবার থাকে না ; কাজেই সোজা রাস্তা হচ্ছে মহাজনের অনুসরণ । বৈষ্ণব কবিতায় ব্যাঙের ডাক কোকিলের ডাকের