পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৬৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
শিল্প ও ভাষা
৬৩

ভিতর দিয়ে—“অরণ্যান্যরণ্যান্যসৌ যা প্রেব নশ্যসি, কথা গ্রামং ন পৃচ্ছসি নত্বা ভীরিব বিদন্তি॥ বৃষারাবায় বদতে যদুপাবতি চিচ্চিকঃ। আঘাটিভিরিব ধাবয়ন্নরণ্যানির্মহীয়তে॥ উতগাব ইবাদন্তুত বেশ্মেব দৃশ্যতে। উতো অরণ্যানিঃ সায়ং শকটীরিব সর্জতি॥ গামং গৈষ আ-হুয়তি দার্বং গৈষো অপাবধীৎ। বসন্নরণ্যান্যাং সায়মক্রুক্ষাদিতি মন্যতে॥ ন বা অরণ্যানিহংত্যন্যশ্চেন্নাভি গচ্ছতি। স্বাদো ফলস্য জগ্ধায় যথাকামং নি পদ্যতে॥ আঞ্জনগন্ধিং সুরভিং বহুন্নাসকৃষিবলাং। প্রাহং মৃগানাং মাতরমরণ্যানি মশংসিষং॥” ১৪৬ দেবমুনি ঋক্‌দেব॥

 “হে অরণ্যানি! হে অরণ্যানি! তুমি যেন দেখিতে দেখিতে লুপ্ত হও (কত দূরেই তুমি চলিয়াছ)! অরণ্যানি, তুমি গ্রামের বার্ত্তাই লও না, তোমার ভয় নাই এমনি ভাবে একাকী আছ।

 “জন্তুরা বৃষের ধ্বনিতে কি যেন বলিতেছে, উত্তর সাধক পক্ষীরা চিচ্চিক স্বরে যেন তাহার প্রত্যুত্তর দিতেছে। এ যেন বীণার ঘাটে ঘাটে ঝনৎকার দিয়া কাহারা অরণ্যানীর মহিমা কীর্ত্তন করিতেছে। বোধ হয় অরণ্যানীর মধ্যে কোথাও যেন গাভী সকল বিচরণ করিতেছে, কোথাও অট্টালিকার মত কি দৃশ্যমান, ছায়ালোকে মণ্ডিত সায়ংকালের অরণ্য যেন কত শত শকট ওখান হইতে বাহির করিয়া দিতেছে! কে ও! গাভী সকলকে ফিরিয়া ডাকিতেছে, ও কে! কাষ্ঠ ছেদন করিতেছে, অরণ্যের মধ্যে যে লোক বাস করে সেই লোক বোধ করে সন্ধ্যাকালে যেন কোথায় কে চীৎকার করিয়া উঠিল! বাস্তবিক কিছু অরণ্যানী কাহারো প্রাণবধ করে না, অন্যান্য শ্বাপদ জন্তু না আসিলে ওখানে কোন আশঙ্কা নাই। নানা স্বাদু ফল আহার করিয়া অরণ্যে সুখে দিন যাপন করা যায়, মৃগনাভি গন্ধে সুরভিত অরণ্য সেখানে কৃষিগণ নাই, অথচ বিনা কর্ষণেই প্রচুর খাদ্য উৎপন্ন হয়। মৃগগণের জননীস্বরূপা এমন যে অরণ্যানী তাঁহাকে এইরূপে আমি বর্ণন করিলাম।”

 এখন উপরের এই অরণ্য বর্ণনার একটা তর্জমা বাঙ্গলায় না করে ছবির ভাষায় করলে অনেকের পক্ষে বোঝা সহজ হতো সবাই বল্‌বে। ভাল কথা—বর্ণনাটা ছবিতে ধরতে আর্ট স্কুলের পরীক্ষার দিনে কাঁচা আধপাকা পাকা সব আর্টিষ্টদের হাতে দেওয়া গেল, ফল কি হল দেখ। কচি আর্টিষ্ট যে ছবি দিয়ে শুধু বাচন করতেই জানে সে অরণ্যানী এইটুকু