পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৭৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মাছরাঙা
৬১

তীরবেগে নামিয়া ঝুপ করিয়া জলমধ্যে প্রবেশ করে এবং ক্ষণপরেই দেখা যায় যে, একটী মাছকে আড়াআড়ি চঞ্চুবদ্ধ করিয়া সে উঠিয়া পড়িয়াছে। উড্ডীয়মান অবস্থায় মাছ গলাধঃকরণ করিতে ইহারা পারে না, সেইজন্য পুনরায় ডালের উপর আসিয়া মাছটীকে ঠুকিয়া হত্যা করে এবং পরে লম্বালম্বি ধরিয়া মুখমধ্যে চালনা করে। ক্ষুদে মাছরাঙা মাছ ছাড়া অন্য কিছু খায় না। ছোট ছোট মাছই ইহারা শীকার করে। শুনিয়াছি আস্ত মাছটা গলাধঃকরণ করিলেও, আহারের কয়েকঘণ্টা পরে কাঁটাগুলি গোলাকার অবস্থায় উদ্গার করিয়া ফেলে। পেচকদেরও এই অভ্যাস আছে।

 খুব বেশী উড়িয়া বেড়াইতেও ইহারা পারে না। ডানা দুটী ছোট বলিয়াই বোধ হয় এইরূপ। স্বভাবতঃই এরা নিশ্চল আর নীরব, বেশীর ভাগ সময়ই জলের উপর বিলম্বিত কোনও ডালে বসিয়াই কাটায়। কখনও কখনও জলাশয়ের উপরে জলের খুব নিকট দিয়া উড়িয়া যায় এবং সেই সময় ইহাদের কণ্ঠ হইতে কর্কশ ধ্বনি বাহির হয়। ইহারা সঙ্গীপ্রিয় নহে, জোড়ায় জোড়ায় থাকে, অন্য মাছরাঙা সেখানে আসিলে কুরুক্ষেত্র বাধিয়া যায়।

 যে মাছরাঙাটী বৃহৎ জলাশয়, নদী এবং বড় খালের ধারে থাকে, সেটী আকারে বেশ বড়, শালিকের মত। ইহাদের গায়ে শুধু সাদা ও কালো রঙের অসংখ্য ডোরা। সুতরাং ইহাকে আমরা “ডোরাদার মাছরাঙা” আখ্যায় অভিহিত করিতে পারি। ইংরেজ ইহাকে “দি পায়েড কিং-ফিসার” বলে। মাছরাঙার মধ্যে এইটী সদা-ক্ষিপ্র ও চঞ্চল। ইহারা কেবলই ডানার উপর থাকে। ইহাদিগকে খুব কমই বসিয়া থাকিতে দেখা যায়। জলের কোন একটা স্থানের সোজা উৰ্দ্ধে একটা জায়গা তাক করিয়া দ্রুত পক্ষসঞ্চালনদ্বারা অনেকক্ষণ একই স্থানে উড়িয়া থাকিতে পারে। অন্য কোনও পাখী একস্থানে