পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bペ বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—শিক্ষা প্রাণবধ করেন । আরায় দূতপ্রেরণ করিয়া, এরূপ অনুষ্ঠানের হেতুজিজ্ঞাসা করাতে, তিনি সাতিশয় গৰ্বিবত বাক্যে এই উত্তর দেন, ঐ উপদ্বীপ আমার অধিকারে থাকিবেক, ইহার অন্যথা হইলে, আমি বাঙ্গালা আক্রমণ করিব । এই সমস্ত অত্যাচার দেখিয়া, গবর্ণর জেনেরল বাহাদুর, ১৮২৪ খুঃ অব্দের ৬ই মে, ব্ৰহ্মাধিপতির সহিত যুদ্ধের ঘোষণা করিলেন। ইঙ্গরেজেরা, ১১ই মে, ব্ৰহ্মরাজ্যে সৈন্য উত্তীর্ণ করিয়া, রেঙ্গুনের বন্দর অধিকার করিলেন। তৎপরেই, আসাম, আরাকান, ও মরগুই নামক উপকূল তাহদের হস্তগত হইল। ইঙ্গরেজদিগের সেনা, ক্রমে ক্রমে, আবা রাজধানী অভিমুখে প্রস্থান করিল ; এবং, প্রয়াণকালে, বহুতর গ্রাম, নগর অধিকার পূৰ্ব্বক, ব্রহ্মরাজের সেনাদিগকে পদে পদে পরাজিত করিতে লাগিল । ১৮২৬ খৃঃ অব্দের আরম্ভে, ইঙ্গরেজদিগের সেন অমরপুরের প্রত্যাসন্ন হইলে, রাজা, নিজ রাজধানীর রক্ষার্থে, ইঙ্গরেজদিগের প্রস্তাবিত পণেই, সন্ধি করিতে সম্মত হইলেন। অনন্তর, এক সন্ধিপত্র প্রস্তুত হইল ; ঐ সন্ধিপত্র যান্দাবুসন্ধিপত্র নামে প্রসিদ্ধ। তদ্বারা ব্ৰহ্মাধিপতি ইঙ্গরেজদিগকে মণিপুর, আসাম, আরাকান, ও সমুদয় মার্ভাবান উপকূল ছাড়িয়া দিলেন ; এবং, যুদ্ধের ব্যয় ধরিয়া দিবার নিমিত্ত, এক কোটি টাকা দিতে সম্মত হইলেন । যৎকালে ব্রহ্মদেশীয়দিগের সহিত যুদ্ধ হইতেছিল, ঐ সময়ে ভরতপুরের অধিপতি দুর্জনশালের সহিতও বিরোধ উপস্থিত হয় । তিনি, আপন ভ্রাতা মাধু সিংহের সহিত পরামর্শ করিয়া, নিজ পিতৃব্যপুত্র অপ্রাপ্তব্যবহার বলবন্ত সিংহের হস্ত হইতে রাজ্যাধিকারগ্রহণ করিবার উদ্যম করিয়াছিলেন । সর চার্লস মেটকাফ সাহেব, দুর্জনশালকে বুঝাইবার জন্য, বিস্তর চেষ্টা পাইলেন ; কিন্তু কোনও ফলোদয় হইল না। তখন স্পষ্ট বোধ হইল, শস্ত্রগ্রহণ ব্যতিরেকে এ বিষয়ের মীমাংসা হইবেক না । বিশেষতঃ, এই স্থান অধিকার করা ইঙ্গরেজের অত্যন্ত আবশ্বক বিবেচনা করিয়াছিলেন। ১৮৮৫ খৃঃ অব্দে, ইঙ্গরেজদিগের সেনাপতি, লার্ড লেক, ঐ স্থান অবরুদ্ধ করিয়াছিলেন । কিন্তু তাহাতে অধিক সেনা ও অনেক সেনাপতির প্রাণবিনাশ হয় । ইঙ্গরেজেরা, এ পর্য্যস্ত, যত দুর্গের অবরোধ করেন, তন্মধ্যে কেবল ভরতপুরের দুর্গ ই অধিকার করিতে পারেন নাই । ইহাতে, সমস্ত ভারতবর্ষ মধ্যে, এই জনরব হইয়াছিল, ইঙ্গরেজের এই দুর্গ কখনই অধিকার করিতে পরিবেন না। উহার চতুর্দিকে, অতি প্রশস্ত মৃন্ময় প্রাচীরের পাদদেশে, এক বৃহৎ পরিখা ছিল । তৎকালে অনেক সৈন্য ব্রহ্মদেশীয় যুদ্ধে ব্যাপৃত থাকিলেও, বিংশতি সহস্র সৈন্য ও এক শত কামান ভরতপুরের সম্মুখে অবিলম্বে নীত হইল। ভারতবর্ষীয় সমুদায় লোক,