পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

 রাষ্ট্রপতি সুভাষচন্দ্রের সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা গঠনের সঙ্কল্প স্থূল আদর্শবাদ বা কল্পনাবিলাসিতার পরিচায়ক নহে, উহা কংগ্রেসের অতীত ইতিহাসের সহিত সর্ব্বতোভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও তৎকালীন পরিস্থিতির সূক্ষ্ম বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণ ও গভীর রাজনীতিজ্ঞানের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত। অতীতে কংগ্রেসের কর্ম-পরিষদ কখনই এক মতাবলম্বী লোক লইয়া গঠিত হয় নাই। পূর্ববর্ত্তী পরিষদেও শ্রীযুক্ত শরৎচন্দ্র বসু ও পণ্ডিত জওহরলালকে দক্ষিণপন্থী বলা চলে না।

 মহাত্মাজীর সহিত সুভাষচন্দ্রের এই বিষয়ে অনেক পত্র ও টেলিগ্রাম আদান-প্রদান হয়, কিন্তু মতভেদ দূর হয় নাই। শ্রীযুক্ত বসু তাঁহার পত্রে অসঙ্কোচে ও খোলাখুলিভাবে গান্ধীজীকে সমস্ত বিষয় জানাইয়াছেন। প্রত্যেকটি ঘটনা ও তাহার কার্য-কারণ যথাযথরূপে প্রকাশ করিয়াছেন। তাঁহার পত্র পড়িয়া তাঁহার মনোগতভাব ঠিক ঠিক বুঝা যায়। কিন্তু গান্ধীজীর পত্র পড়িলে এই কথাই মনে হইবে যে তিনি যেন অত্যন্ত সাবধানে ও সতর্কতার সহিত প্রত্যেকটি কথা উচ্চারণ করিয়াছেন। সুভাষচন্দ্র নিজের মতামত নিঃশেষে ব্যক্ত করিয়া তাঁহার ভুল-ভ্রান্তি সংশোধন করিয়া লইতে চাহিয়াছেন, কিন্তু গান্ধীজী তাঁহার মত পরিবর্ত্তন করিলেন না।

 গান্ধী-বসু পত্রালাপ হইতে জানা যায়, রাজকোটে জনৈক সংবাদদাতা গান্ধীজীকে জানাইয়াছিলেন যে, ত্রিপুরীতে পূর্বতন ওয়ার্কিং কমিটির উপর আস্থা জ্ঞাপন করিয়া এক প্রস্তাব উত্থাপন করা হইবে। ইহাও প্রকাশ, গান্ধীজী উক্ত সংবাদদাতার নিকট এই প্রস্তাবের বিষয়ে তাঁহার সম্মতি জ্ঞাপন করেন। অবশ্য ইহা জানা যায় নাই, উক্ত সংবাদদাতা গান্ধীজীকে পূর্ণ প্রস্তাবটি শুনাইয়াছিলেন কিনা—বিশেষ করিয়া নূতন কর্ম-পরিষদ গঠন সম্পর্কিত অংশটি। শ্রীযুক্ত বসু এক পত্রে গান্ধীজীকে লিখিয়াছিলেন, “ত্রিপুরীতে জোর গুজব রটিয়াছে যে, পন্থ-প্রস্তাব আপনার সমর্থন