আন্দোলন সমর্থন করিতে থাকেন। কিন্তু কিছুদিন পরে এই ব্যক্তিগত নিরুপদ্রব আইন অমান্য আন্দোলনও থামিয়া যায়। পরে গান্ধীজির পরামর্শে সমস্ত কংগ্রেস সংগঠনগুলি ভাঙ্গিয়া দেওয়া হয়। গান্ধীজি কারণ দেখাইলেন—ব্যাপক আইন অমান্য আন্দোলনকালে গুপ্ত আন্দোলন কৌশল গ্রহণ করিয়া কংগ্রেস কর্মীরা সঙ্ঘগুলিকে দুর্নীতি যুক্ত করিয়া ফেলিয়াছে। সংগ্রামকালে সমস্ত প্রতিষ্ঠানই গুপ্ত পন্থা অবলম্বন করে,—সংগ্রামশীলতা বাঁচাইয়া রাখিবার জন্য গুপ্ত আন্দোলনই সংগ্রামের প্রাণ। কিন্তু গান্ধীজির কর্মপন্থায় গুপ্ত আন্দোলন বা কোনপ্রকার গোপনতার স্থান নাই। রাজনীতিতে গোপন কৌশল তিনি সমর্থন করেন না। শত্রুর সহিত সংগ্রামে লিপ্ত হইয়াও শত্রুর নিকট সমস্ত কিছুই প্রকাশ্য ও প্রকাশিত রাখাই তাঁহার নীতি।
এই সময়ে ভিয়েনা হইতে সুভাষচন্দ্র ও বিঠলভাই প্যাটেলের এক যুক্ত বিবৃতি প্রকাশিত হয়। উহাতে বলা হয়, “আমাদের সুস্পষ্ট অভিমত এই যে, রাজনৈতিক নেতা হিসাবে মহাত্মাজি ব্যর্থকাম হইয়াছেন। বর্ত্তমানে কংগ্রেসদের মধ্যে আমূল পরিবর্ত্তন পন্থী (Radical) প্রতিষ্ঠান গঠনের সময় নূতন নেতার অনিবার্য্য প্রয়োজন উপস্থিত হইয়াছে। কারণ আজীবন অনুসৃত জীবন-নীতির বিরোধী কোন কর্মপন্থা গান্ধীজি গ্রহণ করিবেন ইহা আশা করা যায় না। এই সময়ে কংগ্রেসের অভ্যন্তরে সমাজতান্ত্রিক দল বা “সোশ্যালিষ্ট পাটি” গঠিত হয়। মার্ক্সের চিন্তাধারা ও রাশিয়ার সোভিয়েট রিপাব্লিকের মতবাদ এই দল গঠনের বিশেষ প্রেরণা যোগায়। সুভাষচন্দ্রও সোশ্যালিষ্ট পার্টির আদর্শের সমর্থন করেন। কিন্তু তাঁহার মতে, সমাজতন্ত্র আদর্শ ভারতের আশু প্রয়োজন নহে। ভারতের পক্ষে আশু ও অবিলম্বে স্বাধীনতা অর্জনই সর্বাগ্রে প্রয়োজন। কাজেই সমাজতন্ত্র আদর্শ অসময়ে টানিয়া আনিয়া সুভাষচন্দ্র স্বাধীনতা অর্জনের সর্বপ্রধান সমস্যাকে অযথা জটিলতর করিতে