পাতা:বিবিধ কথা.djvu/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০২
বিবিধ কথা

পরম বিস্ময়ের পাত্র—কারণ, ইহারা সাধারণ নরনারীর মত ক্ষুদ্রমনা বা স্বার্থমোহগ্রস্ত নয়। তথাপি ইহারা মৃত্যুর মত এত বড় একটা ঘটনার সম্বন্ধে উদাসীন—মনের মধ্যে সে প্রশ্নকেই যেন ঠাঁই দিতে নারাজ।

 মৃত্যুতে শোক করা, আর মৃত্যুকে দেখা—এই দুইটা এক নয়; এই কথাটাই বার বার বলিয়াও শেষ করিতে পারিতেছি না। শোক সকলেই করে; কিন্তু মৃত্যুকে দেখিতে সকলে চায় না, বা পারে না। মৃত্যুকে যথার্থ দেখিতে পাইলে যে জ্ঞানের উদয় হয় তাহা বজ্রালোকের মত—জীবনের সকল তিমির-সংস্কার বিদীর্ণ করিয়া সে আলোকচ্ছটা মানুষের মানস-চক্ষু ধাঁধিয়া দেয়; সে বজ্র যাহার উপর পতিত হয় সে তন্মুহূর্ত্তেই মহা রহস্য-সাগরে বিলীন হইয়া যায়। যে তাহাকে দেখিয়াছে মাত্র, সেই বজ্রের আলোক যাহার দুই চক্ষু ঝলসিয়া দিয়াছে, সে অস্তিত্বের ঐকান্তিক অভাব চকিতে অনুভব করিয়াছে; সে বুঝিয়াছে, সকল জ্ঞানের সীমা কোথায়—মানুষের মানসবৃত্তি মহাশূন্যকে আচ্ছাদন করিয়া জীবন-রঙ্গভূমির জন্য যে মিথ্যা-বিচিত্র যবনিকা রচনা করে তাহার ছিদ্র কোথায়। সে ছিদ্রমুখে দৃষ্টি সংলগ্ন করিলে যে সত্যের উপলব্ধি হয়, তাহাতে এই প্রতীতি জন্মে যে, জীবনের বাহিরে আর কিছুই নাই—মৃত্যুর পরে আর কোনও রহস্য নাই, মৃত্যু অমৃতের দ্বার নহে। এই জীবনই—‘তিক্ত হোক, মিষ্ট হোক—একমাত্র রস’। ইহার হিসাব বা ব্যবস্থা করিবার কালে কোনও অদৃষ্ট ভবিষ্যৎকে গণনার মধ্যে গ্রহণ করা ভুল; সে ভরসা ত্যাগ করিয়া বীরের মত জীবন-যাপনের নীতি স্থির কর; ভগবান বা পরলোক, আত্মার অমরতা বা ব্রহ্মণ—এ সকল মরীচিকা মাত্র; মৃত্যুকে চাক্ষুষ করিবার মত সাহস নাই বলিয়া,