পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৩৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९२ বিভূতি-রচনাবলী পুকুরটা ডান দিকে পড়িয়াছিল। মূলে আমার মুখে রামটেকের মন্দিরের ইতিহাস শুনিয়া কিছুক্ষণ চুপ করিয়া রহিল। পরে বলিল—আপনি এসব নিয়ে খুব নাড়াচাড়া করেছেন দেখছি, বহুৎ পড়াশুনো করেছেন। এইজন্তেই তো বাঙালীদের আমি বড় ভালবাসি—বাঙালীর সঙ্গে আলাপ করলে আমার মন বড খুশী হয়। মন্দিরের আরতি থামিয়াছিল। আমি বলিলাম—এখানে একটা অস্ত্রাগার অাছে বইয়ে পড়েছি—চলুন সেটা দেখে আসি সবাই, এখনও আছে বলে জানি। মন্দিরের পুরোহিত বৃদ্ধ রংড়ে ব্রাহ্মণ, পূৰ্ব্বেই পরিচয় পাইয়াছিলাম। তিনি প্রথমে যুদ্ধ আপত্তি তুলিলেন, রাত্রে অস্ত্রাগার দেখানোর নিয়ম নাই—অবশেষে আমাদের নিতান্ত নাছোড়বান্দা দেখিয়া, বিগ্রহ যেখানে থাকেন তাহার পাশের একটা কুঠুরি খুলিয়া দিলেন। আমরা টর্চের আলোয় সেখানে মারাঠী যোদ্ধাদের প্রকাণ্ড চওড়া দুধার তলোয়ার, সাতহাত লম্বা বন্দুক, বিশাল ঢাল, লোহার জালের টুপি ও বর্শ্ব, নানা রকমের তীর, আরও কত কি অস্ত্রশস্ত্র দেখিলাম। যোদ্ধজাতির যুদ্ধের উপকরণ পাচরকম থাকিবে-ইহার মধ্যে আশ্চৰ্য্য হইবার কিছু নাই। প্রশংসার ভাব মনে জাগিত হয়তে, যদি বর্গির হাঙ্গামার কথা মনে না উঠিত । মূলে বলিল—এ আর কি, যোধপুর ওল্ড ফোর্টে একটা মিউজিয়াম আছে, সে এর চেয়ে অনেক বড় । কোন কিছু দেখিয়া আশ্চৰ্য্য হইবার ক্ষমতা একটা বড় ক্ষমতা—এ ক্ষমতা সকলের থাকে না, মূলোর মধ্যে তাহ থাকিবার আশা করি নাই ; সুতরাং বিস্মিত হইলাম না। নবীনদা বলিলেন—আপনাদের দেশে যোধপুরে একবার নিয়ে যাবেন আমাদের ? অস্ত্রাগার দেখে আসব। o —নিশ্চয়ই। ইন ফ্যাক্ট, আমাদের নিজ বাড়ীতেই একটি অস্ত্রাগার আছে, আমার পূর্বপুরুষের আমলের । . —বলেন কি মিঃ শুকরাম! 鼻 —ইণ। আমার অতিবৃদ্ধ প্রপিতামহ ছিলেন আওরঙজেবের আমলের লোক ! তার নাম—আচ্ছা নোটবুক দেখে বলব। আমরা হলাম ডোগরা রাজপুত—ওয়ারিয়ার ক্ল্যান ডোগরা রাজপুত জানেন তো? আমাদের সেই পূৰ্ব্বপুরুষ, তিনি লড়েছিলেন জয়সিংহের সৈন্যদলে। এখনও অস্থাগারের পূজো হয় আমাদের বাড়ী। ধূপধুনো জালাতে হয়, সিদ্ধর মাথাতে হয়— নবীনদা বাংলায় বলিলেন—সাবাস মুলো ! ডোগরা রাজপুত হয়ে মরতে এসেছ কন ইউনিভার্সিটির ডিগ্রি নিতে ? s কি তোমার হবে ? আমিও বাংলায় জবাব দিলাম—বিষ হারিয়ে টোড়, মূলের ছকুলই গিয়েছে। অস্ত্র ধরবার ক্ষমতু নেই, লেখাপড়ারও বুদ্ধি নেই—একে বলে হস র্যাডিশ। মুলো বলিল—কি ?