পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১80 विछूउि-झनावलौ —আপনার লেখা বের চেচ বিভাবরী’ কাগজে—তাদের অফিস থেকে নিয়েছি— —তারপর, অনেককাল পর দেখা—কি খবর বলো ? • —শনেন, দিদিকে মনে আছে তো ? দিদি আমায় পাঠিয়ে দিয়েচে—বলে দিয়েচে যদি কলকাতায় যাস, তবে মাস্টার মশায়ের সঙ্গে দেখা করিস । আপনার কথা বড় বলে; আপনি একবার আসন না চাঁপদানীতে ! —পটেশ্বরী ? সে এখনও মনে ক’রে রেখেছে আমার কথা ? রসিক সরে নিচু করিয়া বলিল—আপনার কথা এমন দিন নেই—আপনি চলে এসেচেন আট দশ বছর হ’ল—এই আট দশ বছরের মধ্যে আপনার কথা বলে নি—এমন একটা দিনও বোধ হয় যায় নি। আপনি কি কি খেতে ভালবাসতেন—সে সব দিদির এখন মুখস্থ । কলকাতায় এলেই আমায় বলে মাস্টার মশায়ের খোঁজ করিস না রে ? আমি কোথায় জানব আপনার খোঁজ—কলকাতা শহর কি চাঁপদানী ? দিদি তা বোঝে না। তাই এবার বিভাবরী'তে আপনার লেখা— —পটেশ্বরী কেমন আছে ? আজকাল আর সে সব খবশরেবাড়ির অত্যাচার— —শাশুড়ী মারা গিয়েচে, আজকাল কোন অত্যাচার নেই, দু'তিনটি ছেলেমেয়ে হয়েছে, —সে-ই আজকাল গিন্নী, তবে সংসারের বড় কষ্ট । আমাকে বলে দেয় বোতলের চাটনি কিনতে—দশ আনা দাম—আমি কোথা থেকে পাব—তাই একটা ছোট বোতল আজ এই দেখনে কিনে নিয়ে যাচ্ছি ছ' আনায় । টেপারির আচার। ভালো না ? —এক কাজ করো । চলো আমি তোমাকে আচার কিনে দিচ্ছি, আমের আচার ভালবাসে ? চলো দেশী চাটনি কিনি । ভিনিগার দেওয়া বিলিতি চাটনি হয়তো পছন্দ করবে मा । —আপনি কবে আসবেন ? আপনার সঙ্গে দেখা হয়েচে অথচ আপনাকে নিয়ে যাই নি শনলে দিদি আমাকে বাড়িতে তিষ্ঠুতে দেবে না কিন্ত, আজই আসন না ?— —সে এখন হবে না, সময় নেই। সবিধে মত দেখব । অপর অনেকগলি ছেলেমেয়ের খেলনা, খাবার চাটনি কিনিয়া দিল। রসিককে স্টেশনে তুলিয়া দিয়া আসিল । রসিক বলিল—আপনি কিন্ত ঠিক যাবেন একদিন এর মধ্যে—নৈলে ওই বললাম যে— কি চমৎকার নীল আকাশ আজ ! গরম আজ একটু কম । চৈত্র দপুরের এই ঘন নীল আকাশের দিকে চাহিলেই আজকাল কেন শৈশবের কথাই তাহার মনে পড়ে ? একটা জিনিস সে লক্ষ্য করিয়াছে । বাল্যে যখন অন্য কোনও স্হানে সে যায় নাই— যখন যাহা পড়িত—মনে মনে তাহার ঘটনাসহলের কল্পনা করিতে গিয়া নিশ্চিন্দ্রিপরেরই বাঁশবন, আমবাগান, নদীর ঘাট, কুঠির মাঠের ছবি মনে ফুটিয়া উঠিত—তাও আবার তাদের পাড়ার ও তাদের বাড়ির আশে-পাশের জায়গার । তাদের বাড়ির পিছনের বাঁশবন তো রামায়ণ মহাভারত মাখনো ছিল—দশরথের রাজপ্রাসাদ ছিল তাদের পাড়ার ফণিমখ ষ্যেদের ভাঙা দোতলা বাড়িটা-মাধবীকঙ্কণে পড়া একলিঙ্গের মন্দির ছিল ছিরে পকূেরের পশ্চিমদিকের সীমানার বড় বশিঝাড়টার তলায়-বঙ্গবাসীতে পড়া জোয়ান-অব-আক মেষপাল চরাইত নদীপারের দেয়াড়ের কাশবনের চরে, শিমল গাছের ছায়ায়“তারপর বড় হইয়া কত নতুন স্থানে একে একে গেল, মনের ছবি ক্ৰমশঃ পরিবতিত হইতে লাগিল—ম্যাপ চিনিল, ভূগোল পড়িল, বড় হইয়া যে সব বই পড়িল তাদের ঘটনা নিশ্চিদিপরের মাঠে, বনে, নদীর