পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মৌরীফুল రి}\లి জায়গাটা একবার হাত বুলাইয়া লওয়া ভাল —যাক, এইবার ঘুমাইবেন । এতক্ষণে নিশ্চিন্তু হইলেন। রাত দুইটা ! কিন্তু নিশ্চিন্ত হইতে পারিলেন না। একটা হাট কি মেলা কোথায় যেন বসিয়াছে, রাঘব দাড়াইয়া দাড়াইয়া দেখিতেছেন। সব লোক চলিয়া গেল, তবুও দু'দশজন এখনও হাটচালিতে ভিড় করিয়া দাড়াইয়া শুঢ়কী চিংড়ি মাছের দর কষাকষি করিতেছে—ইহার বিদায় হইলেই রাঘব নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাইবেন। একটা লোক চলিয়া গেল—দুইটা—তিনটা SSBBBB BB BB BB BB BBB BBBBBB BB B BB BSBBB BBBD BBBD করিতেছেন, অমুনয়বিনয় করিতেছেন, হাত জোড় করিতেছেন—তিনি একটু এইবার ঘুমাইবেন, দোহাই তাহদের, তাহারা চলিয়া যাকৃ। এখনও জন তিনেক বাকী।.রাঘবের মনে উল্লাস হইল, আর বিলম্ব নাই।...এখনও দুইজন। এই দুইজন চলিয়া গেলেই ঘুমাইবেন । আর একজন মাত্র !.মিনিট পনেরো দেরী—তাঁহা হইলেই ঘুমাইবেন ! হঠাৎ রাঘব বিছানার উপর উঠিয়া বসিলেন । হাট তে কোথাও বসে নাই ? কিসের হাট ? কোথাকার হাট । এ সব কি আবোল গবোল ভাবিতেছেন তিনি ? ঘুম তাহা হইলে বোধ হয় : রাঘব কথাটা ভাবিতেও সাহস করিলেন না। কল্প রাত ? ওটা কিসের শক ?..বীজপুরের কারখানায় ভোরের বাঁশি বাজিতেছে নকি ? সে তে রাত চারটায় বাজে। এখনই রাত চারটা বাজিল ? অসম্ভব ! যা, যথেষ্ট বাজে কথা ভাবিয় রাত কাটাইয়াছেন। আর নয়। এইবার তিনি ঘুমাইবেন। অল্প একটু ঘোর আসিয়াছিল কিনা কে জানে ? ভোরের ঠাণ্ড বাতাসে হয়তো একটু আসিতেও পারে। কিন্তু রাঘবের দৃঢ় বিশ্বাস তিনি এতটুকু ঘুমান নাই—চোথ চাহিয়াই ছিলেন। হঠাৎ একটা ব্যাপার ঘটিল। বিস্মিত রাঘব দেখিলেন, তাহর খাটের পাশের বাশের খুঁটিটা যেন ধীরে ধীরে একটা বিরাটকায় মূর্তি পরিগ্রহ করিয়া তাহার মাথার শিয়রে আসিয়া দাড়াইল ; ব্যঙ্গের মুরে অঙ্গুলি হেলাইয়া বলিল—মূৰ্খ! ঘুমোবার ইচ্ছা থাকে তো কালই গহনার বাক্স ফেরত দিস। ভাগ্নে-বউয়ের গহনা চুরি করেছিল, লজ্জ করে না ?” বীজপুরের কারখানার বাঁশির শব্দে রাঘবের ঘোর কাটিয়া গেল। ফরসা হইয়া গিয়াছে ! রাধবের বুক ধড়ফড় করিতেছে, চোখ জালা করিতেছে, মাথা যেন বোঝা, শরীর ভাঙিয়া পড়িতে চাহিতেছে না, তিনি একটুও ঘুমান নাই—এতটুকু না। বাশের খুঁটি-টুট কিছু না—ও-সব মাথা গরমের দরুণ - কিন্তু ঠিক একই স্বপ্ন রাঘব পর পর দুইদিন দেখিলেন। ঠিক একই সময়ে, ভোর রাত্রে, বীজপুরের কারখানার বাশি বাজিবার পূর্বে ঘুমাই নাই তবে স্বপ্ন কোথা হইতে আসিবে ? বীজপুরের বাসায় অন্ত কেহ তখন ছিল না। নন্দলাল কাজে বাহির হইয়াছে, নন্দলালের স্ত্রী সাবান দিয়া কাপড় কাচিতেছিল। হঠাৎ বৃক্ষ চুল, জীর্ণ চেহারায় মামাশ্বশুরকে বাসায় ঢুকিতে দেখিয়া সে বিস্থিত মুখে একবার চাহিয়াই লজ্জায় ঘোমটা দিয়া উঠিয়া দাড়াইল ।