পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অভিযাত্রিক في سوريا আমি বললুম-কেন, বাঘ । পাণ্ডাঠাকুর বললে—সেকথা কিন্তু ঠিক । বাঘের ভয় বিলক্ষণ আছে ওখানে। আপনি ষে সন্ধ্যার সময় ঐ ঝরনার ধারে গিয়ে বসে থাকবেন তা আমি কি করে জানবো ? আমি ভেবেচি আপনি ইন্টিশানে বেড়াতে যান সন্ধাবেল ট্রেন দেখবার জন্তে । পাগুঠিাকুরের স্ত্রী আমায় বললেন এর পরে—আমি আপনার জন্তে ভাত রোধে কত্ত রাত পর্যন্ত বসে রইলুম। শেষে রাতে ঘুমুতে পারিনি আপনার কি হল ভেবে। এতগুলি নিরীহ লোক আশঙ্কা ও উদ্বেগের মধ্যে রাত কাটিয়েচে আমার জন্তে এবং আমিই এ জন্তে মূলত দায়ী, এতে আমি যথেষ্ট লজ্জিত হলুম। সেদিন দুপুরের ট্রেনে আমি পরের স্টেশনে নেমে বারিয়াডাল রওনা হই । শুধু বারিয়াডাল নয়, পায়ে হেঁটে এই সময় আমি চন্দ্রনাথ পাহাড়শ্রেণীর অনেক অংশ দেখে বেড়িয়েছিলুম। বারিয়াডাল একটা গিরিবত্ম, পাহাড়শ্রেণীর যেখানটাতে নীচু খাজ, সেখান দিয়ে একটা রাস্ত পাহাড় টপকে ওপারে নেমে গিয়েচে । বারিয়াডাল অঞ্চলে কয়েকটি বড় বড় ঝরনা ও সহস্রধারা নামে জলপ্রপাত আছে ! আমি সহস্রধারা দেখবার সুযোগ পাইনি–কিন্তু শৈলশ্রেণীর অনেক অংশে প্রায় তিনদিন ধরে ঘুরেছিলুম। একটা কথা আমার মনে হয়েচে এই শৈলমালা ও অরণ্যের সম্বন্ধে। বাংলাদেশের মধ্যে এমন পাহাড় ও বনের শোভা আর কোথাও নেই। এই বনের প্রকৃতি যেরূপ, আসাম ছাড়া ভারতের কুত্রাপি এ ধরনের বন দেখা যাবে না । বারিয়াডাল পার হয়ে পাহাড়ের পূর্বে সাচুতে এসে বনের শোভা আরও চমৎকার লাগলো। এত বড় বড় ঝোপ, আর বড় বড় লতা চন্দ্রনাথ তীর্থ যেদিকে, সেখানে নেই। এদিকে খুব বড় বড় গাছ যেমন দেখচি, আমার মনে হয় আরাকান-ইয়োমার জঙ্গলেও অত বড় বড় গাছ নেই। গাছের গুড়িগুলো সোজা উঠেচে অনেকদূর, যেন কলের চিমনির মতো। একটা গাছের কথা আমার মনে আছে। শিমুল গাছের গুড়ির মতো তিন দিকে তিনটি বড় বড় থাজ, এক একটা থাজের মধ্যে এতটা জায়গা যে সেখানে এক একটি ছোটোখাটো পরিবারের রান্নাঘর হতে পারে। এই জাতীয় গাছ চন্দ্রনাথ পর্বত ছাড়া অন্ত কোথাও দেখিনি—বা এখানে যত অপরিচিত শ্রেণীর গাছ দেখেচি,এমনটিও বাংলাদেশের আর কোথাও দেখেচি বলে মনে হয় না। sqiq qșfð beauty spot-a foi fi | স্থানটি আমার আবিষ্কার, এর বিবরণ কারো মুখে আমি শুনিনি বা কেউ কোথাও লেখেনি। বারিয়াডাল ছাড়িয়ে সাত মাইল উত্তরপূর্ব দিকে পাহাড়ের তলায় ওলায় গেলে আওরঙ্গজেবপুর বলে একটা গ্রাম পড়ে। গ্রামটিতে মুসলমানের বাস, হিন্দু আদৌ নেই। আমি ষে জায়গাটির কথা বলছি, আওরঙ্গজেবপুর থেকে সেটা আড়াই মাইল কি তিন মাইল দূরে দুটি পাহাড়ের মধ্যে। আওরঙ্গজেবপুরের মুসলমান গৃহস্থদের অতিথিবৎসলভা আমাকে যুদ্ধ করেছিল। আজ