अडिश्ब्लिक ৪২১ বলেই খেয়ে নেবো। পরে দেখা গেল এ প্রস্তাব করে কি ভালোই করেছিলাম! ভাগ্যে খাবারের পুটুলি রেখে যাইনি। গিয়ে দেখি বনের মধ্যে আসলে পাহাড়ী ঝরনাটাই একটা থাতের মতো স্বাক্ট করচে । একটা মানুষের গলা পর্যন্ত জল ডোবাটাতে। স্নান সেরে শালবনের ছায়ায় বসেই আমরা জামালপুর থেকে কেন পুরী ও জিলিপি খেলাম, তারপর ঝরনার জল খেয়ে নিয়ে আমরা আগের সেই শালবনের তলায় ফিরে এসে দেখি, হেমেন যে ছোট সুটকেসটি ফেলে গিয়েছিল, সেটি নেই। এই জনহীন বনে সুটকেস চুরি করবে কে ? কিন্তু করেচে তো দেখা যাচ্চে। সুতরাং মাছৰ নিশ্চয়ই এখানে কোথাও আছে। আমরা সে দলের লোক নই, যে দলের একজন চিড়িয়াখানার জিরাফ দেখে বলেছিল—অসম্ভব ! এমন ধরনের জানোয়ার হতেই পারে না ! এ আমি বিশ্বাস করিনে। হেমেন বললে—নতুন মুটকেসটা ভাই, সেদিন কিনে এনেচি কলকাতা থেকে— —কিন্তু নিলে কে তাই ভাবচি— —আমার মনে হয় বনের মধ্যে রাখাল কি কাঠকুড়ুনি মাগী ঘুরতে ঘুরতে এদিকে এসেছিল—বেওয়ারিশ মাল পড়ে আছে দেখে নিয়ে গিয়েচে– —জিনিসের আশা ছেড়ে দিয়ে চল এখন খাদ মুনির আশ্রমের খোজ করি— আবার সেই ‘বুদ্ধ নারিকেল পথে পড়লো। এ গাছের দিকে চেয়ে শ্রদ্ধা হয় বটে। এই জাতীয় গাছই বনস্পতি নামের যোগ্য। কলের চিমনির মতে সোজা উঠে গিয়েচে, দেবদারুর মতো কালো মোটা গুড়ি—ওপরের দিকে তেমনি নিবিড় শাখা-প্রশাখা ; তবে গাছটাতে শাখা-প্রশাখা দূরে ছড়ার ন—অনেকটা ইউক্যালিপটাস গাছের ধরনে ওপরের দিকে তাদের গতি। হেমেন হঠাৎ বললে—দেখ, দেখ–ওগুলো কি হে ? সত্যি, ভারি অপূর্ব দৃপ্ত বটে। একটা গাছের ডাল-পালায় কালে কালো কি ফল ঝুলচে, রাশি রাশি ফল, প্রত্যেক ডালে দশটা পনেরোটা—ভারি চমৎকার দেখাচে এখান থেকে। হেমেন বললে—একটা নয় হে, ও রকম গাছ আরও রয়েচে ওর পাশেই— এইবার আমি বুঝলাম। দূর থেকে ভালো বোঝা যাচ্ছিল না। বন্ধুকে বললুম—ওগুলো আসলে বাদুড় ঝুলচে গাছের ডালে-দূর থেকে ফলের মতো দেখাচ্চে— হেমেন তো অবাক। সে এমন ধরনের বাদুড় ঝোলার দৃপ্ত এর আগে কখনো দেখেনি বললে। কাজর ভ্যালির সে গভীর দৃপ্ত জীবনে কখনো সত্যি ভোলবার কথা নয়। দুদিকে দুটাে পাহাড়শ্রেণী, মাঝখানে এই বনময় উপত্যক, বিশাল বনস্পতি সমাকুল, নির্জন, নিন্তব্ধ। আমার কানে ঝরনার শব্দ গেল। দুজনে ঝরনার শবধরে সামনের দিকদিয়ে দূরে পাহাড়শ্রেণীর তলায় বনের মধ্যে একটা মন্দিরের চুড়ে দেখতে পেলুম। ওই নিশ্চয়ই ঋষ্যশৃঙ্গ মুনির আশ্রম। হেমেন বললে—আমার সুটকেস্ট আশ্রমের বালক-বালিকার নেয়নি তো হে ? বনের মধ্য দিয়ে আমরা মন্দিরের কাছে পৌঁছে গেলাম। জায়গাটার দৃপ্ত বড় মুন্দর।
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/8/88/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A7%82%E0%A6%A4%E0%A6%BF_%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A7%80_%28%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%29.djvu/page447-1024px-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A7%82%E0%A6%A4%E0%A6%BF_%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A7%80_%28%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%29.djvu.jpg)