পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

이o বিভূতি-রচনাবলী ডাক পৰ্য্যস্ত নেই কোনদিকে ! এমন সব জায়গাও থাকে পৃথিবীতে ! আমার আজ কেবলই মনে হচ্ছে, পপলার ঘেরা সেরিনো লাগ্রানো হ্রদ আর দেখবো না, তার ধারে যে চতুর্দশ শতাব্দীর গির্জাট, তার সেই বড় রূপোর ঘণ্টার পবিত্র ধ্বনি, পাহাড়ের ওপরে আমাদের যে প্রাচীন প্রাসাদ কাস্টোলি রিওলিনি, মুরদের দুর্গের মত দেখায়-দূরে আমব্রিয়ার সবুজ মাঠ ও দ্রাক্ষাক্ষেত্রের মধ্যে দিয়ে ছোট ডোরা নদী বয়ে যাচ্ছে...যাকৃ, আবার কি প্রলাপ বকছি! গুহার দুয়ারে বসে আকাশের অগণিত তারা প্রাণভরে দেখছি শেষ বারের জন্যে।--সাধু ফ্রাঙ্কোর সেই সৌর স্তোত্ৰ মনে পড়ছে—স্থত হোন প্রভু মোর, পবন সঞ্চার তরে, স্থির বায়ু তরে, ভগিনী মেদিনী তরে, নীল মেঘ তরে, আকাশের তরে, তারকা-সমূহ তীরে, স্থদিন-কুদিন তরে, দেহের মরণ তরে। আর একটা কথা। আমার দুই পায়ের জুতোর মধ্যে পাঁচখানা বড় হীরা লুকানো আছে, তোমায় তা দিলাম হে অজানা পথিক বন্ধু। আমার শেষ অন্তরোধটি ভুলে না। জননী মেরী তোমার মঙ্গল করুন। কম্যাণ্ডার আত্তিলিও গাক্তি ১৮৮০ সাল । সম্ভবতঃ মার্চ মাস।” 赛 * * 肇 হতভাগ্য যুবক ! তার মৃত্যুর পরে সুদীর্ঘ ত্রিশ বৎসর চলে গিয়েছে, এই ত্রিশ বৎসরের মধ্যে এ পথে হয়তে কেউ যায় নি, গেলেও গুহাটার মধ্যে ঢোকে নি। এতকাল পরে তার চিঠিখানা মানুষের হাতে পড়ল । আশ্চর্য্য এই যে কাঠের পিপেটতে ত্রিশ বছর পরেও জল ছিল কি করে ? কিন্তু কাগজখানা পড়েই শঙ্করের মনে হল, এই লেখায় বর্ণিত ঐটেই সেই গুহা—সে নিজে যেখানে পথ হারিয়ে মারা যেতে বসেছিল । তার পরে সে কৌতুহলের সঙ্গে কঙ্কালের পায়ের জুতো টান দিয়ে খসাতেই পাচথান বড় বড় পাথর বেরিয়ে পড়ল। এ অবিকল সেই পাথরের কুড়ির মত, যা এক-পকেট কুড়িয়ে অন্ধকারে, গুহার মধ্যে সে পথে চিহ্ন করেছিল এবং যার একখানা তার কাছে রয়েছে। এ পাথরের কুড়ি তো রাশি রাশি সে দেখেছে গুহার মধ্যের সেই অন্ধকারময়ী নদীর জলস্রোতের নীচে, তার দুই তীরে ! কে জানতো যে হীরার খনি খুজতে সে ও আলভারেজ সাতসমুদ্র তেরো নদীর পার হয়ে এসে, ছ'মাস ধরে রিখটার্সভেন্ড পাৰ্ব্বত্য অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে হয়রান হয়ে গিয়েছে—এমন সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ভাবে সে সেখানে গিয়ে পড়বে ! হীরা যে এমন র॥শ রাশি পড়ে থাকে পাথরের চুড়ির মত—তাই বা কে ভেবেছিল ! আগে এসব জানা থাকৃলে, পাথরের কুড়ি সে দু-পকেট ভরে কুড়িয়ে বাইরে নিয়ে আসতো ! কিন্তু তার চেয়েও খারাপ কাজ হয়ে গিয়েছে যে, সে রত্নখনির গুহ ষে কোথায়, কোন