বিভূতি-রচনাবলী খুলকো, অথচ ধুলোমাখা পায়ে আলতা পয়া। একেবায়ে মায়ের সামনে পড়াতে আঁচলে বঁখা আমি দেখাইয়া চোক গিলিয়া কহিল-এই পুণ্যপুকুরের জন্তে ছোলার গাছ আনতে গেলাম রাজীদের বাষ্ঠী, আমি পেড়ে এনেছে, ভাগ হচ্চে, তাই স্নাষ্ট্ৰীয় পিসিমা দিলে। -আহা, মেয়ের দশা তাখো, পায়ে খড়ি উড়ােচ, মাখার চুল দেখলে গায়ে জয় আলোপুণ্যপুকুরের জন্তে ভেবে তো তোমায় স্নাত্তিরে ঘুম নেই। -পরে মেয়ের পায়ের দিকে চাহিয়া কহিল-ফেয়া বুঝি লক্ষ্মীর চুবড়ি থেকে আস্তা বেৱ ক’রে পরা হয়েচে ? দুৰ্গা আঁচল দিয়া মুখ মুছিয়া উসকো খুলকো চুল কপাল হইতে সরাইয়া বলিল-ইেলক্ট্রীয় চুবড়িয় আলতা বৈকি! আমি সেদিন হাটে বাবাকে দিয়ে আলতা আনালােম এক পয়সার, তার দরুণ দু’পাতা আলতা আমার পুতুলের বাক্সে ছিল না বুঝি ? হরিহর কলকে হাতে রায়ান্বয়ের দাওয়ায় আগুন লাইতে আসিল । সৰ্ব্বজয়া বলিল-ঘণ্টায় ঘণ্টায় তামাকে আগুন দি কোথা থেকে ? সুদৱীকাঠের বন্দোবস্তু ক’য়ে রেখেচো কিনা একেবায়ে ! বঁাশের চেলায় আগুন কতক্ষণ থাকে যে আবার ঘড়ি-ঘড়ি তোমাক খাওয়ার আগুন যোগাবো ? পরে আগুন তুলিবার জন্য রক্ষিত একটা ভাঙা পিতলের হাতাতে খানিকটা আগুন উঠাইয়া বিরক্তমূখে সামনে ধরিল। পরে সুর নরম করিয়া বলিল-কি হোল ? -এক রকম ছিল তো সবই ঠিক, বাড়ীম্বন্ধ সবাই মাস্তৱ নেবার কথাই হয়েছিল; কিন্তু একটু মুকিল হয়ে যাচ্ছে। মহেশ বিশ্বেসের শ্বশুরবাড়ীর বিষয়-আশয় নিযে কি গোলমাল বেধেছে, বিশ্বেস মশায় গিয়েচে সেখানে চলে-সে-ই আসল মালিক কিনা। তাই আৰুৱা একটু পিছিধে গেল ; আবায় এদিকেও তো অকাল পড়চে আষাঢ় মাস থেকে । --আর সেই ষে বাসের জায়গা দেবে, বাস করাবে বলছিল, তার কি হােল ? -এই নিয়ে একটু মুন্ধিল বেধে গেল কিনা! ধরে খদি মন্থর নেওয়া পিছিয়ে যায়, তবে ও-কথা আর কি ক’রে ওঠাই ? সৰ্বজয়া খুব আশায় আশায় ছিল, সংবাদ শুনিয়া আশাভঙ্গ হইয়া পড়িল। বলিল, তা ওখানে না হয়, অন্য কোনো জায়গায় দ্যাথো না ? বিদেশে মান আছে, এখানে কেউ পোছে ? এই স্থাখো আম-কঁঠালের সময় একটা আম-কঁঠাল ঘরে নেই-মেয়েটা কাদের বাড়ী থেকে আজি দু’টো আধাপচা আমি নিয়ে এল।--পিরে সে উদ্দেশে বাড়ীর পশ্চিম দিকে মুখ ফিরাইয়া বলিল-এই ঘরোয় দোয় থেকে ঝুড়ি ঘুড়ি আমি পেড়ে নিযে যায়-বাছারা আমার চেয়ে চেয়ে স্থাখে-এ কি কম কষ্ট। বাগানের কথার উল্লেখে হরিহয় বলিল-উ, ও কি কম ঘড়িবাজ নাকি ! বছৱে পচিশ টাকা খাজনা ফেলে-কেলে হোতো, তাই কিনা লিখে নিলে পাঁচ টাকায় ! আগামি গিয়ে এত করে বললাম, কাক, আমার ছেলেটা মেয়েটা আছে, ঐ বাগানে আম-জােম কুড়িয়ে মানুব হচ্ছে। আমার তো আর কোথাও কিছু নেই। আর ধরুন, আমাদের জাতির বাগানআপনার তো ঈশ্বর ইচ্ছেন্ন কোনো অভাব নেই, দুটো অত বড় বাগান রয়েছে, আম জাম
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/১১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।