পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sካይ/° গৃহগুলির অবস্থােন কিছু দুয়ে-দুয়ে। মাঝে-মাঝে রয়েছে। মরকত-বর্ণের ক্ষু হিপাপ এবং কামুক-কর্মকারী বিংশবিটপের বেড়া। সেগুলির পাশে অনধিকার প্রবেশে বাধা দেবার উদ্দেশ্ৰেষ্ঠ সাজিত রয়েছে-কণ্টকিত কয়লী-মজরীয় রক্তবর্ণ বৃতি । বৃক্ষবাটিকার গুল্প-গহনতায় দেখতে পাওয়া গেল এরও, বাচ, বঙ্গক, স্বরণ, (গুযণী শাক ), শেগট (শীগ ), গ্ৰন্বিপর্শ, গোধুক (কাশিয়া) এবং গমৃৎ ঘাস। পাহারার জন্য পাশে-পাশে উঠেছে ছোট-ছোট উচু মাচান-তাদের মাথায় অলাৰুৱা লতা। খদিৱকাঠের খুঁটিতে বাধা য়’য়েছে বাছুরের দল। মাচানের পাশে ফলন্ত ভুমুরের উজ্জ্বল শোভা। দূরের একটি কুটির থেকে হঠাৎ উঠল কুকুটের আরটন। কুটিরের আঙ্গিনাট অগস্তি গাছের স্তম্ভ দিয়ে রচিত । তার মধ্যে ছিল ক্ষিপ্ৰ বাজপাখী ও গ্ৰহৰাজ কপোতের ছোট-ছোট কুঠরি। আঙ্গিনার পাশে ছোট একটি পুষ্করিণী, তাতে ফুট রয়েছে পদ্মফুল । এই গ্রামগুলির শোভাখানি সুন্দরিত ছিল :- কোথাও কিংশুক ফুলের অগ্নিমান সমারোহে ; কোথাও শান্মলী ফুলের তুলার সঞ্চায়ে ; কোথাও নল শালি ধানের এবং বেণুকুঞ্জের শ্বামলতায় ; কোথাও নাল-বীজের স্বর্ণ-শোভায় ; কোথাও কুমুত্ব-শালুকের বীজের শর্কারিত খণ্ডের তণ্ডুলে। কুসুম্ভস্কুলের বন্ধনী দিয়ে অপূর্ব কৌশলে রাখী করা রয়েছে রাজাদান চাউলের ময়াই। মদন ফল দিয়ে স্ফীত করা রয়েছে মধুক স্কুলের মন্দ। কুম্ভে কুন্তে সঞ্চিত রয়েছে রাজমাসা (মম্বর), ত্ৰপুৰ ( শশা ), কুন্মাণ্ড, অলাৰু এবং কর্কটিকার (কঁকুড়ের ) বীজ। তাদের পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে পোষা বিড়াল এবং জাত-কুকুর। এই বনগ্রামক-গুলি উত্তীর্ণ হয়ে ভিন্ন দেশে যখন উপনীত হলেন শ্ৰীহৰ্যদেব, তখন আকাশে লেগেছে সন্ধ্যা-সুৰ্য্যের অন্তই। অরণ্যের প্রান্তে এসে শিবিয়-সংস্থানের আদেশ দিলেন শ্ৰীহৰ্যদেব । ধরিত্রীমাতার স্বাভাবিক পারিপাশ্বিকের মধ্যে যে মানুষকে পাওয়া যায়, তার বিষয় পাঠ ক'রে ধীয়া আনন্দ পান, তাদের সকলের কাছে, ভারতীয় সাহিত্যে প্ৰকৃতি-দেবীর স্থান---এই বিষয়টি বিশেষ মনোক্ত হবে। মনে হয়- একথা জোর দিয়েও কোনও কোনও সমালোচক বলেছেন।--তারতের মানুষ পৃথিবীর বহু অন্য দেশের মানুষের চাইতে নিজেকে খুব ঘনিষ্ঠভাবে প্ৰকৃতির সঙ্গে প্রকৃতিীয় সন্তান ব'লে মিলিয়ে” দিয়েছে। প্রাচীন ও মধ্য যুগের তাৱতীয় শিল্পকলায়, আর শতাব্দীর পর শতাব্দী ধ’রে ভারতীয় সাহিত্যে এ-কথার প্রচুর প্রমাণ পাওয়া যাবে। এবিষয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গীর সঙ্গে তার সুলভা প্রতিবেশী চীনের দৃষ্টিভঙ্গীৱ বেশ পার্থক্য আছে। চীন এখন থেকে অন্ততঃ আড়াই হাজার বছর পূর্বে প্ৰকৃতিকে যে চোখে অৰলোকন করতে আরম্ভ করে, সেটা হচ্ছে মার্জিত-কুচি নাগরিকের চোখ-ষে নাগরিক নিজেকে প্ৰাকৃতিক পৰিবেশ থেকে একটু বেন আলাদা করে দেখতে শিখেছিল; আর এ-কথা অস্বীকার করা যায়। না, এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গী হচ্ছে আধুনিক মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী, আর এটি বিদগ্ধ সৌন্দৰ্য্যপিপাৱ