পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আদর্শ হিন্দুহোটেল vუs) —হাজারিদ, হোটেলের অৰ্দ্ধেক জিনিস পদ্মদিদির ঘরে—আজকাল বাজারের জিনিস পৰ্য্যস্ত যেতে আরম্ভ করেচে। সেদিন দেখলে তো কুম্ড়োর কাও ? চুষে খাবে এমন সাজানো হোটেলটা বলে দিচ্চি। পদ্ম দিদির কেন অত টান বাড়ীর ওপরে—তাও আমি জানি। তবে বলিনে, যাহোক আট টাকা মাইনের চাকুরিটা করি—এ বাজারে হঠাৎ চাকৃরিট অনখক খোয়াবো ? সন্ধ্যার পরে হাজারি হোটেলের গঘির দিয়া ঢুকিতে সাহস না করিয়া রান্নাঘরের দিকের দরজা দিয়া হোটেলে ঢুকিল। ভাবিয়ছিল রান্নাঘরে রতন ঠাকুরকে দেখিতে পাইবে—কিন্তু একজন অপরিচিত উড়িয়া ঠাকুরকে ভাত রাধিতে দেখিয়া সে যে-পথে আসিয়াছিল, সেই পথেই বাহির হইয়া যাইবার জন্য পিছন ফিরিয়াছে—এমন সময় খরিদারদের খাবার ঘর হইতে পদ্ম ঝি বলিয়া উঠিল—কে ওখানে ? কে যায় ? হাজারি ফিরিয়া বলিল—আমি পদ্মদিদি— পদ্ম তাড়াতাড়ি ঘরের বাহির হইয়া আসিয়া বলিল-আমি ?—কে আমি ?—ও । হাজারি ঠাকুর।--তুমি কি মনে করে ? চলে যাচ্চ কোথায় অত তাড়াতাড়ি । ঢুকলেই বা কেন আর বেরুচ্ছই বা কেন ? —আজ হাজত থেকে খালাস পেয়েচি পদ্মদিদি । কোথায় আর যাবে, যাবার তো জায়গা নেই কোথাও—হোটেলেই এলাম, খিদে পেয়েচে—দুটো ভাত খাবো ব'লে। রান্নাঘরে এসে দেখি রতন ঠাকুর নেই, তাই সামনে দিয়ে গদিঘরে যাই— —তা ধাও গদিঘরে । এই খদ্দেরের খাবার ঘর দিয়েই যাও— হাজারি সঙ্কুচিত অবস্থায় হোটেলের খাবার ঘরের দরজা দিয়া ঢুকিয় গদির ঘরে গেল। পদ্ম ঝি গেল পিছু পিছু । বেচু চকত্তি বলিলেন– এই যে, হাজারি ষে ! কি মনে করে ? হাজারি বলিল—আজ্ঞে কৰ্ত্তামশায়, পুলিসে ছেড়ে দিলে আজ—তাই এলাম। ষাবো আর কোথায় ? আপনার দরজায় দুটো ক’রে থাই । তা ছেড়ে আর কোথায় যাবে। বলুন ? বেচু চকত্তি কোনো উত্তর দিবার আগেই পদ্ম ঝি আগাইয়া আসিয়া বেচু চকত্তিকে বলিল —ওকে আর একদও এখানে থাকতে দিও না কৰ্ত্তাবাৰু—এখুনি বিদেয় করো। বাসন ও আর মতি যোগসাজসে নিয়েচে । পাকা চোর, পুলিসে কি করবে ওদের ? হাজারি এবার রাগিল। পদ্ম বিকে কখনও সে এ স্বরে কথা বলে নাই। বলিল—তুমি দেখেছিলে বাসন নিতে পদ্ম দিদি ? 磷 পদ্ম ঝি বলিল—তোমার ও চোখ-রাঙানির ধার ধারে না পদ্ম, তা বলে দিচ্ছি হাজারি ঠাকুর। অমন ভাবে আমার সঙ্গে কথা বলে না—বাপন তোমাকে নিতে দেখলে হাতের দড়ি তোমার খুলতো না তা জেনে রেখে । হাজারি নিজেকে সামলাইয়া লইয়াছে ততক্ষণ । নীচু হওয়াই তাহার অভ্যাস—ৰাহার