পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఇలిన বিভূতি-রচনাবলী বলিল, ওর ঘোর জর বিকার হয়েছে । লোক চিনতে পারছে না, চোখ লাল, মাথায় জল ঢাল। উপরিভাব-টাব বাজে, ওকে ডাক্তার দেখাও, নইলে বাচবে না। ফকিরের কৰ্ম্ম নয় এ সব । উহাদের মধ্যে একজন বলিল, এ দ্বিগরে বরাবর থেকে ফকির সায়েব ঝাড়ান-ফাল্গুন, তেলপড়া দিয়েই রোগ সারান বাৰু। ডাক্তার কোথায় এখানে ? ডাক্তার আছে সেই রামনগরের হাটে, নয়তো সেই চাকদার বাজারে । আর এক আছে রাণাঘাটে। ছু কোশ রাস্তা। এক মুঠে। টাকা খরচ ক'রে কি গরীবগুরবে লোকে ডাক্তার আনতি পারে ? ૨ গদাধরপুর হইতে বিপিন যখন বাহির হইয়া ফাক মাঠে পড়ল, তখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়া গিয়াছে। অন্ধকার রাত্রি, একটু পরেই টাঙ্গ উঠিবে। চাদ ওঠার জন্তই সে এতক্ষণ অপেক্ষা করিতেছিল। মাঠে জনপ্রাণী নাই। অপূৰ্ব্ব তারাভর রাত্রি। আকাশের দিকে বিপিনের নজর পড়িত ন, যদি টাঙ্গ কখন ওঠে, ইহা দেখিবার প্রয়োজন তাহার না হইত। কিন্তু আকাশের দিকে চাহিয়া নক্ষত্রভর। অন্ধকার আকাশের গুপ্ত দেখিয়া জীবনে এই বোধ হয় প্রথম বিপিনের বড় ভাল লাগিল । কেমন নিস্তদ্ধতা, কেমন একটা রহস্তময় ভাব রাত্রির এই নিস্তব্ধতায় ! এত ভাল লাগিবীর প্রধান কারণ, এই সময় মানীর কথা তাহার মনে পড়িল । আজ যে এই সব দরিদ্র রোগপীড়িত মানুষদের সে চোখের উপর অজ্ঞতার ফলে ময়ণের পথে অগ্রসর হইতে দেখিয়া আসিল, মানীই তাহাকে পথ দেখাইয়া বলিয়া দিয়াছে, ইহাদিগকে মৃত্যুর হাত হইতে কি করিয়া বাচাইতে হইবে। ডাক্তার নাই, ঔষধ নাই, সৎপরামর্শ দিবার মানুষ নাই, কঠিন সান্ত্রিপাতিক বিকারের রোগী, সম্পূর্ণ অসহায় । জলপড়া, তেলপড়ার চিকিৎসা চলিতেছে । ওদিকে কামিনী-মাপীয় ওই অৰস্থা, তাহার छांदेरङ्गञ्च eहे चदइीं । মানী তাহাকে পথ দেখাইয়া দিয়াছে, যে পথে গেলে অর্থ ও পুণ্য ছুইই মিলিবে। গরীব প্রজাদের প্রতি অত্যাচার করিয়া, তাহাজের রক্ত চুৰিয়া তাহার বাবা এবং মানীর ৰাৰ ছুইজনেই ফুলিয়া ফাপিয়া মোটা হুইয়াছেন বটে, কিন্তু ঠাহাজের ছেলেমেয়েরা সে পাপ পথে চলিবে তো নাইই, বরং পিতৃদেবের কৃতকর্ণের প্রায়শ্চিত্ত করিবে নিজেদের দিয়া । মানী তাহাকে জীবনে আলো দেখাইয়াছে। একটি অদ্ভূত মনের ভাবের সহিত বিপিনের পরিচয় ঘটিল আজ হঠাৎ এই মাঠের মধ্যে।