পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অসাধারণ Հծծ ফিরিওয়ালা গলির মধ্যে হাকচে–চাই ল্যাংড়া আম–ল্যাংড়া আ-আ-ম— , বৃষ্টি এখনও নামে নি এবার। জ্যৈষ্ঠ মাসের গরম প্রায় সমান ভাবেই চলচে। মতির ছোট বোন এসে বললে—দশ পলা তেল ধার দেবেন কাকিম ? শু্যামলী বললে—হবে না । তেল নেই। —আট পলাও হবে না ? —কিছু নেই। মেয়েট চলে গেল। শু্যামলী তেল দেবে কি, ওদের কোন আক্কেল নেই। শু্যামলী কি সাধে রিক্ত হয়েচে ? উনি খারাপ কলের তেল খেতে পারেন না বলে এক নম্বর কানপুর কিনে আনেন ওঁর আপিসের রেশন বেচে । সে কী বাজওয়ালা তেল । মতির এক কৌশল ধরেচে কি, বিশ পলা সেই ভাল তেল হথায় ধার নেবে, আর ধার শোধ দেবে পাচ সিকে সেরের কলের তেল দিয়ে। উনি বলেন, ও তেল খেলে বেরিবেরি হয় । স্যামলীদের ফি হঞ্চায় বিশ পলা তেল অপব্যয়ে যায় । & ওরা চালাক আছে। একবার নেবে দশ পলা, তারপর আর একদিন এসে দশ পলা । একসঙ্গে নেবে না। একেবারে যেন মৌরসী পাট্টা করে বসেচে।--দেবো না তেল, রোজ রোজ ও চালাকি খাটবে না আমার কাছে। দেখি কি হয় । কিন্তু মতির মায়ের কৌশল অন্যরকম। সে এতটুকু চটলো না, আবার একবার বাটি হাতে এসে হাজির স্বয়ং মতির মা । —ও খামলী, দে দিকি ভাই একটু তেল। —তেল নেই দিদি । —দিতেই হবে । মাছ ভাজা হচ্চে না, পাচ পলা তেল দে— —যা আছে আমারই কুলোবে না দিদি— —দেখি তোর তেলের বোতল ? দে ভাই আমায় পাচ পলা— অগত্যা খামলী উঠে গিয়ে তেল দেয়, ও আবার পরের কাদুনি-মিনতি বেশীক্ষণ সহ করতে পারে না । ঠকচে তো দেখাই যাচ্চে, ঠকুক। লোকে তাতে খুশী হয়, হোক । কিন্তু এই সামান্য ব্যাপার নিয়ে দোতলার ভাড়াটেদের মধ্যে মহা ঘোটমঙ্গলের স্বষ্টি হোল । মতির মা গিয়ে সাতখানা করে লাগিয়েচে তাদের কাছে |•••তেল থাকতেও দিতে চাচ্চিল না, বোতল দেখতে চাইলুম, তাই তো দিলে। এমন ছোট নজর তো কখনো করতে পারি নে আমরা । এই যে সেদিন বোশেখ মাসে ওঁর পেটের ব্যথা ধরলে রাত্তিরে, যন্ধুবাবু সোডা চেয়ে নিয়ে যান নি আমাদের এখান থেকে। দিই নি আমরা ? লোকের কাছে হাত পেতে যেমন নিতে হয়, তেমনি দিতেও হয়। তবে লোকে মাস্থ্য বলে । তার পরের দিন আর কলতলায় যাওয়া যায় না । বড় বড় বালতি, ঘড়া আর টব পড়লে একের পর এক সকাল থেকে । সে সব সরিয়ে এক বালতি রায়ার জল নিতে গেলেও ঝগড়ায় মুখর হয়ে উঠবে সারা বাড়ীটা—সেকথা হামলী ভাল রকমেই জানে। অনেকবারের