পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অসাধারণ ●ፃፃ আলাপ হয়েছিল, তাই বেঁচে আছে কি না জানতে চাইচি । —র্বাচবে না তো যাবে কোথায় ? —মেলা হয় ? —পাগল ঠাকুরের মেলা? কেন হবে না, যত বেটা বুনো বাঙ্গির গুরুদেব, শুধু ব্যাটারা এসে পায়ের ধুলো নেয়, হৈ হল্লা করে। বাট মারো। গুরু-গুরু ! গুরু এমনি গাছের यज्ञ किन । আমি কিন্তু বিকেলেই পাগল ঠাকুরের বাড়ী গিয়ে হাজির ৷ সেবারকার সেই প্রথম দর্শনের স্মৃতি আমার বালক-মনে একটি রহস্যজনক স্থান অধিকার করে আছে তখনও। আবার তাদের সেই দুখানা খড়ের ঘর, নিকোনো পুছোনো গোবর-লেপ উঠোন, ঝিঙের ফুল-ফোটা গঙ্গার তীরে অপরাহ্ল শোভা কতকাল পরে দেখলুম। পাগল ঠাকুরের দাড়ি আরও শাদা হয়ে নারদ মুনির মত দেখতে হয়েচে । তবে বাৰ্দ্ধকাজনিত কোনো শীর্ণত্ব বা দৌৰ্ব্বলা নেই শরীরে । খুব শক্ত সমর্থ, লাঠি লাঠি চেহারা । মুখে সেই হাসি। এবার আর আমি নিতান্ত বালক নেই। অনেক জিনিস বুঝি। আগের ভয় আর নেই। —বললাম তোমাকে বড় ভালো লেগেছিলো সেবার—বডড মনে হোতে তোমাকে— হেসে বললে—গুরু-গোসাইয়ের কৃপা বাবাঠাকুর, তুমি যে পতিতপাবন, পতিতকে উদ্ধার করতে আসবা না ? —ওসব কথা আমায় বলতে নেই। তুমি আমার নাম মনে রেখেচ যে দেখচি ? —তুমি আমায় মনে রেখেছিলে, তাই আমিও তোমার কথা মনে রেখেছিলাম। আয়নায় মুখ যে বাবাঠাকুর। যেমন দেখাও তেমনি দেখি । —একটা গান কর— ওকে আর দ্বিতীয়বার খোশামোদ করতে হোলো না । সেবারকারের সেই বৃদ্ধাকে দেখলাম এবার। তাকে ডেকে বললে—একতারাটা স্থাও তো। পতিতপাবন ঠাকুরকে একটা গান শোনাই—কিন্তু বাবা, একটা কথা বলি ? বলে সে হালি-হালি মুখে আমার দিকে জিজ্ঞাস্থ নেত্রে চাইলে । আমি বললাম—কি ? 廳 ও একটা আলাভোলা, অসহায় ধরনের অনুরোধ যেন করচে, এমনি ভাবে বললে—জামি যেমন তোমায় গান শুনিয়ে গেলাম, তুমি পতিত উদ্ধার করতে এমনি ধারা আলবা তো...ৰলি ষ্ঠ্য গা ? ও ঠাকুর ?-- না, ও পাগলামি শুরু করেচে আবার । কাকে কি বলে যে । পাগল ততক্ষণ একতারা বাজিয়ে গান শুরু করে দিয়েচে— ও আমার হৃদ-কমলের পরম গুরু গাই, রেতে আলো দিনে তারা রাত নাই দিন নাই।