পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অসাধারণ *ԳՖ খাচ্চি, ও হাত পেতে বালকের মত স্বরে অথচ নারদ মুনির মত দাড়ি নিয়ে আমার ঠাকুরদাদার বয়সী লোক নিঃসঙ্কোচে বললে—স্তাও একখানা । দিলাম। যেন আমার সমবয়সী খেলুড়ে । বললাম—তোমার এখানে থাকতে ভালো লাগে । পাগল ঠাকুর হেসে বললে—তোমাকেও যে আমার রাখতি ভালো লাগে। থাকব। এখানে ? —ইচ্ছে তো করে। বাড়ীর লোকে থাকতে দেবে না যে । পাগল ঠাকুর একটা মাটির পাত্র থেকে গুড়.তুলে নিয়ে দা-কাটা তামাক মাখলে বসে বসে। একটা কন্ধে ভরে তামাক সেজে হাতে করেই টানতে লাগলো। নিজেই একট হাড়ি চডালে উঠোনের এক উকুনে । আমি বললাম—হঁাড়িতে কি হবে ? —বাবাঠাকুর, ক্ষিদে পেয়েচে, কিছু খাবো। দুটাে চাল দিয়ে যাও গেী— হাড়িতে এক খুচিটাক মোট রাঙা আউশ চাল ফেলে দিয়ে একটু পরে বড় বড় গোটাকতক পাক যজ্ঞিডুমুর সামনের জঙ্গলের থেকে পেড়ে নিয়ে আঠা যুদ্ধই ফেললে হাড়িতে। আমি বলে বসে ওর খাওয়ার মজা দেখচি । ও আবার আমার পাশে এসে তামাক খেতে লাগলো । আমায় বললে—বাবাঠাকুর, ওপাড়ের বুনোপাড়া উচ্ছন্নে গেল ওলাউঠোতে। রোজ সেখানে যাই, সারাদিন থাকি, এই খানিকট আগে এইচি, তাই বডড ক্ষিদে পেয়েচে । —সেখানে কি কর ? —আমি কি কিছু করি ? তিনি—গুরু-গোসাই করান। যাদের কেউ নেই আমার অকেজে হাত দিয়ে তিনি তাদের মুখে জল দেন, ওষুধ দেন। আমার হাত ধন্য হয়ে গেল, আমার হাত না দিয়ে অন্ত কারে হাত নিলেই পারতেন। তেনার কৃপা । —গুরু-গোসাই কে, আজ বলতে হবে। —ওই যে উনি–নিরাকার, সব ঘটে আছেন যিনি। তাই তো তুমি আমার পতিতপাবন ঠাকুর । তুমিও যা, তিনিও তা—তোমার মধ্যেই তিনি। যারা রুগী, ওলাউঠোয় বমি করচে, হলদে হয়ে গিয়েচে চোখের শির, হাতে পায়ে খিচুনি ধরেচে, গলা ঘড়ঘড় করচে—তাদের মধ্যে জনায় জনায় তিনি। তিনি উকি মারেন ওদের চোখের মধ্যে থেকে।. বেশ দেখতে পাই— বমি ঘাটি, ঘেন্না আসে না, মনে হয় গুরু-গোসাইয়ের সেবা করচি। খেলা, সব তার খেলা । র্তার আবার রোগ ! লীলা ! —জামায় নিয়ে যাবে বুনোপাড়ায় ? তোমার সঙ্গে যাবে। —ওরে বাবা রে! আমন কচি সুন্দর নতুন হাত বমি ঘাটবার জন্তে নয়। তার এখন দেরি আছে, ও গবের জন্তে তাড়াতাড়ি কি ? পড়ে, এখন খুব মন দিয়ে পড়ে। একটু পরে ও তাত নামালে। একটা আঙট কলার পাতে চেলে যজ্ঞিভূমুরগুলো টিপে টিপে জুন তেল দিয়ে মাখলে । জামায় বললে—কিছু মনে কোরো না বাৰাঠাকুর, আমি