করিব! শুন, ঐ শুন, এজিদ-শিবিরে যুদ্ধের বাজনা বাজিতেছে। গাজী রহ্মানের স্বীকৃত বাক্য রক্ষা হইল।—ঈশ্বরই চারিদিক পরিষ্কার করিয়া দিলেন। ক্ষণকাল বিলম্বও এখন আর সহ্য হইতেছে না, শীঘ্র প্রস্তুত হও। অদ্যই দুরাত্মার জীবন শেষ করিয়া পরিজনদিগকে বন্দীগৃহ হইতে উদ্ধার করিব।”
সকলে মনের আনন্দে যুদ্ধসাজে ব্যাপৃত হইলেন। মোহাম্মদ হানিফা জয়নালকে ওত্বে অলীদের পরিচয় দিয়া বলিলেন, “এই অলীদ কোন সময় বলিয়াছিলেন: এজিদের জন্য অনেক করিয়াছি। হাসান-হোসেনের প্রতি অনেক অত্যাচার করিয়াছি! আমি উহা পারিব না। সেই কথা কয়েকটা আমার হৃদয়ে গাঁথা রহিয়াছে। আমি সেই কারণেই ইহাকে মস্হাব কাক্কার হস্ত হইতে রক্ষা করিয়াছি। এই অলীদ যদি এ প্রকারে আমাদের হস্তগত না হইতেন, তাহা হইলেও আমি কখনই ইঁহার প্রাণের প্রতি হস্তক্ষেপ করিতে সম্মত হইতাম না, সজ্ঞানে কাহাকেও আক্রমণ করিতে দিতাম না। এই মহাত্মা প্রকাশ্যে পৌত্তলিক —অন্তরে মুসলমান।”
জয়নাল আবেদীন বলিলেন, “আর প্রকাশ্য ও গোপন, এই দ্বিভাবের প্রয়োজন কি?”
অলীদ গাত্রোথান করিয়া বলিলেন, “হজরত। আমি অকপটে বলিতেছি, আপনি আমাকে সত্যধর্ম্মে দীক্ষিত করুন।”
জয়নাল ‘বিস্মিল্লাহ!’ বলিয়া ওত্বে অলীদকে ইসলাম ধর্ম্মে দীক্ষিত করিলেন। মুহূর্ত্তমধ্যে অলীদ-অন্তরে সেই সত্যধর্ম্মের জ্বলন্ত বিশ্বাস, “ঈশ্বর এক—সেই এক ভিন্ন আর উপাস্য নাই” অক্ষয়রূপে নিহিত হইল।
মোহাম্মদ হানিফা অলীদকে সাদরে আলিঙ্গন করিয়া বলিলেন, “ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুন। নূরনবী মোহাম্মদের প্রতি অটল ভক্তি হউক, দয়াময় আপনাকে জেন্নাতবাসী করুন,—এই আশীর্ব্বাদ করি।”
জয়নাল আবেদীনও অলীদের পরকাল উদ্ধার-হেতু অনেক আশীর্ব্বাদ করিলেন।