পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৭৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

নবধর্ম্মের প্রচার ও ব্যাপ্তি

বৎস, তুমি রাজকুলে জন্মগ্রহণ করিয়াছ, তোমার বংশে কে কখন ভিক্ষান্নে জীবন ধারণ করিয়াছেন?” বুদ্ধ বলিলেন—“রাজন্‌, আপনি ও আপনার পিতৃপিতামহগণ রাজকুলে জন্মিয়াছেন সত্য, কিন্তু আমি পূর্ববর্তী বুদ্ধদের বংশেই জন্মলাভ করিয়াছি, তাঁহারা সকলেই ভিক্ষান্নে জীবন রক্ষা করিতেন।” শুদ্ধোদন নির্ব্বাক্‌ হইয়া রহিলেন। বুদ্ধ বলিতে লাগিলেন—“রাজন্‌, পুত্র যদি কোন অমূল্য রত্ন লাভ করে, সে স্বভাবতঃই সেই দুর্লভ রত্ন পিতার চরণে অর্পণ করিতে অভিলাষী হইয়া থাকে। আমি বহু সাধনার ফলে যে সুদুর্ল্লভ ধর্ম্মধন লাভ করিয়াছি, সেই রত্নভাণ্ডার আজ আপনার সমীপে উদ্ঘাটিত করিবার অনুমতি প্রার্থনা করিতেছি, আপনি অনুগ্রহপূর্ব্বক সেই রত্ন গ্রহণ করুন।”

 বুদ্ধ তাঁহার অন্তরের অন্তরতম প্রদেশে উপলব্ধ সত্য পিতৃসন্নিধানে ব্যাখ্যা করিলেন। শুদ্ধোদন নবধর্ম্মে অনুরাগী হইলেন। বুদ্ধকে লইয়া তিনি রাজভবনে গমন করিলেন। তথায় পুরবাসীরা সকলে মিলিত হইয়া বুদ্ধকে অভিবাদন করিলেন।

 এই সম্মিলনে তাঁহার সহধর্ম্মিণী গোপা উপস্থিত ছিলেন না। তিনি প্রশ্ন করিয়া জানিতে পারিলেন যে, গোপা স্বয়ং অগ্রগামিনী হইয়া তাঁহার সহিত দেখা করিতে অস্বীকৃত হইয়াছেন। বুদ্ধ এই সংবাদ শুনিবামাত্র তাঁহার কক্ষে গমন করিলেন। সুদীর্ঘ বিচ্ছেদের পর প্রথম সাক্ষাৎকারে গোপা তাঁহার হৃদয়ের গভীর শোক সংবরণ করিতে পারিলেন না। তিনি তাঁহার আরাধ্যতম দেবতার চরণে লুটাইয়া পড়িয়া অশ্রু বিসর্জ্জন করিলেন। অনন্তর শোকাবেগ প্রশমিত করিলে তিনি একপার্শ্বে শ্রদ্ধাবনত-মস্তকে বসিয়া

৪৭