পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরবত্তী বাদসাহগণ b"? > এই সময়ে দৈব ইংরেজদের সহায় হইল : ফেরোকৃসেয়ার রাজপুতরাজগণের অন্যতম রাজসিংহের সুন্দরী কন্যাকে বিবাহ করিবেন, সব ঠিকঠাক, এমন কি কন্যা রাজধানীতে আনীত হইয়াছেন,-“এই সময়ে সম্রাট গুরুতর পীড়াগ্ৰস্ত হইলেন, দেশী চিকিৎসকেরা হার মানিল । ইংরেজদের ডাক্তার হামিলটন অস্ত্ৰোপচার করিয়া সমাট ফোবোকসেয়ারকে শীঘ্ৰ শীঘ্ৰ ভাল করিয়া দিলেন । তিনি প্ৰতিশ্রষ্ঠত হইলেন, ডাক্তার যাহা চাহিবেন তাহাই দিবেন। ডাক্তার নিজের স্বাৰ্থ না খুজিয়া তাঁহাদেব আবেদন-মঞ্জুরীর প্রার্থনা করিলেন। বিবাহোৎসবের গোলমালে ছয়মাস কাটিয়া গেল। ফেরোকসেয়ার হামিলটনকে অনেক বহুমূল্য উপহার ও জাতীয় সুবিধার কয়েক দফা মঞ্জুর কবিয দিলেন, কিন্তু বাণিজ্যসংক্রান্ত বিষয়গুলিসম্বন্ধে মন্ত্রিবর্গকে রিপোর্ট করিতে বলিলেন । আবেদন যাইয়া পড়িল হুসেন আলি খ্যার কাছে। সুতরাং আবার বিভ্ৰাট। অন্তঃপুরের এক খোজাকে উৎকোচ দিয়া বশীভূত করা হইল। মহাভিষকের দত্ত ঔষধেব মত এই উৎকোচের ক্রিয়া তখনই (यथा 65न | किसु नावाद বাঙ্গলাদেশে তাহা কাৰ্য্যে পরিণত হওয়ার পথে, প্ৰকাশ্যভাবে না পাবিয়া, নানারূপ বাধা জন্মাইতে লাগিলেন । একটা দফা এইরূপ ছিল যে, ইংরেজগণ কলিকাতার পার্শ্বে ৩৮টি নগর কিনিতে পরিবেন। সর্বনাশ, তাহা হইলে তঁাহারা এত বড় হইয়া উঠিবেন যে ফোর্ট উইলিয়ামের জোরে পদে পদে তাহারা নবাবের প্রতিপক্ষতা করিতে সাহস করিবেন। নবাব জমিদারদিগকে ডাকাইয়া বলিলেন, যত মূল্যই দিক না কেন তাহাবা যেন বিদেশীদিগের নিকট জমি বিক্ৰয় না করেন। তবে কলিকাতায় মুরসিদকুলি গা ফেরোকসেয়ারের মঞ্জুরী দলিলের বলে যে সকল সুবিধা দিলেন, তাহাতে র্তাহীদের অবস্থার বিশেষ উন্নতি হইল । এই সময়ে ফেরোকসেয়ার নিষ্ঠুরভাবে নিহত হন ( ১৭১৯ খৃঃ) । মহম্মদাবাদের পাঠানের পুনরায় বিদ্রোহী হইয়াছিল, কিন্তু হুগলীর ফৌজদার আসান আলি খাঁ তাহাদিগকে দমন করেন। তাহারা মুরাসিন্দাবাদের নিকট সরকারী ৬০,০০০২ টাকা লুট করিয়াছিল। মুৱসিন্দকুলি খাঁ সেই টাকা পার্শ্ববৰ্ত্তী জমিদারদিগের নিকট হইতে আদায় করিয়া লইলেন। র্তাহারা কেন পাঠানদিগকে পথ ছাড়িয়া দিযাছিলেন- এই অপরাধে পাঠানদের সমস্ত জমিদারি তিনি তঁাহাব প্রিয় রামজীবন নামক এক হিন্দুকে প্ৰদান করেন। রামজীবন রাজসাহীর জমিদার ছিলেন। নবাব ত্রিপুরা, আসাম ও কুচবিহারের রাজাদের সঙ্গে শ্ৰীতিসূত্রে আবদ্ধ হইয়াছিলেন, এই সকল রাজারা একরূপ স্বাধীনই ছিলেন । নবাবের অত্যাচারে বঙ্গের হিন্দুজমিদারদের কষ্টের একশেষ হইয়াছিল; কেবল বীরভূম ও বনবিষ্ণুপুরের রাজারা অনধিগম্য আরণ্য-রাজধানীতে কতকটা নিরাপদ হইতে পারিয়াছিলেন। মুরসিদকুলি খাঁ হিন্দু ব্ৰাহ্মণ-সন্তান হইয়া হিন্দুধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে যে গোঁড়ামি দেখাইয়াছেন, তাহা ধৰ্ম্মদ্রোহী, অপর ধৰ্ম্মশ্রয়িগণই সর্বদা দেখাইয়া থাকেন। তিনি মোগল-সম্রাট আরঙ্গজেবের প্রিয় ওমরাহ ছিলেন এবং দোষেগুণে সেই নৃপতিই তঁহার আদর্শ ছিলেন। তিনি ২০,০০০ মৌলভী ও গায়ক রাজসভায় নিযুক্ত রাখিয়াছিলেন, তাহারা সদাসৰ্ব্বদা তাহার কাছে