পরবত্তী বাদসাহগণ brMSØ যায় ; “কৃশোদরী,” “ক্ষীণমধ্য,” “ক্ষীণকাটি”-ইত্যাদি বিশেষণ বাল্মীকি সীতার প্রতি প্ৰয়োগ করিয়াছেন ; কালিদাসের “মধ্যে ক্ষমা”ও এ প্রসঙ্গে স্মরণীয়। বাঙ্গলায় কৃত্তিবাসী “মুষ্টিতে ধরিতে পারি। সীতার কাকলী।” লিখিয়া এই সৌন্দৰ্য্যতত্ত্ব আরও জটিল করিয়াছেন। পাশীতে জেলেখার রূপ-বৰ্ণনায় কবি বলিয়াছেন, “জেলেখার কটিদেশ চুলের ন্যায় সূক্ষ্ম, বরং তাহারও অৰ্দ্ধেক ”—আমরা বুঝিতে পারি। এই সকল বর্ণনায় কবিরা কোন সুন্দরী রমণীর দিকে চাহিয়া রূপবর্ণনা করেন নাই-তঁাহারা অলঙ্কারশাস্ত্রের কেরামত ও বুদ্ধির কসরৎ দেখাইতে ব্যস্ত হইযাছেন, তথাপি একথা নিশ্চয় যে চীনা রমণীর ক্ষুদ্রপদের মত ভারতীয় কিংবা পারস্যের রমণীদের ক্ষীণ কাটি ও দেহ প্ৰশংসিত । কথিত আছে মোহনলালের ভগিনীটি ওজনে শুধু ২২সের ছিলেন এবং পান খাইলে মাত্ৰ তীাহার ঠোঁট দুইটি লাল হইত না, তাহার কণ্ঠের খানিকটা অংশ পৰ্যন্ত আরক্তিম হইয়া উঠিত। ইনি নৰ্ত্তকী ছিলেন-ইহাকে নাকি মোহনলাল সিরাজউদৌলাকে দিয়া দিয়াছিলেন, কিন্তু ইনি সিরাজউদ্দৌলার এক শুষ্ঠালকের সঙ্গে ব্যভিচারে ধূত হন। নবাব তাহাকে বলিলেন, “কুমারি । আমি দেখিতেছি, আপনি একটি গণিকা মাত্র।” সুন্দাবী জানিতেন, এবার তাহার রক্ষা নাই, সুতরাং ভারতরমণীর স্বাভাবিক মৃত্যুর প্রতি উপেক্ষা দেখাইয়া তিনি ঘূণার সহিত উত্তর করিলেন, “ই নবাব সাহেব, আমি গণিকাই বটে, আমি নৰ্ত্তকী-গণিকাবৃত্তি আমার ব্যবসায়,” তৎপরে সিরাজের মাতা আমনা বেগমের সম্বন্ধে একটা ক্রুর ব্যঙ্গ করেন। ( অবশ্য সিরাজের মাতা আমনা বেগম সম্বন্ধে নানারূপ কুৎসা প্ৰচলিত ছিল । ) সিরাজ এই কুমারীকে জীবিত অবস্থাতেই চারিদিকে প্রাচীর তুলিয়া বদ্ধ করিয়া মৃত্যুর ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। সত্য মিথ্যা জানি না, মুতীক্ষরিনে যেরূপ বৰ্ণিত আছে, আমি অবিকল তাহাই লিখিলাম।- ( সিয়ার মুতক্ষরিন, ২য় খণ্ড, '৮৮৭ পৃ: ) । কেহ কেহ লিখিয়াছেন, এই রমণী আদবেই মোহনলালের ভগিনী ছিলেন না। মোহনলালের ভগিনীসম্বন্ধে এই সকল কথার মূলে যাহাঁই থাকুক না কেন, একথা কখনই স্বীকাৰ্য্য নহে যে মোহনলাল সেই হতভাগিনী রূপসীর খাতিরে নবাবের প্রিয়পাত্ৰ হইয়াছিলেন, তিনি নবাবের বাল্যসখা ছিলেন, দক্ষতা, বীরত্ব ও বিশ্বস্ততায় যে তাহার দ্বিতীয় ছিল না।--তাহা ইতিহাসে প্রমাণিত হইয়া গিয়াছে। দ্বিতীয় ওমরাহ যাহার উপর সিরাজ সম্পূর্ণ বিশ্বাস করিতেন, তিনি ছিলেন ঢাকনিবাসী মীরমদন । ইহারও অনেক মহা গুণের কথা ইতিহাসে লিখিত আছে। সুতরাং সিরাজ ষে তাহার দুষ্ট কুসঙ্গীদিগকে বড় বড় পদ দিয়াছিলেন, একথা গ্ৰাহী নহে। বরং যখন প্ৰবীণ মন্ত্রী ও ওমরাহের দল চিরকাল তাহার নুন খাইয়া বিশ্বাসঘাতকতা করেন, তখন এই দুই চিরবিশ্বন্ত, রণনিপুণ ও স্বীয় আপদ-বিপদে সম্পূর্ণ নিৰ্ভীক ব্যক্তি সিরাজকে রক্ষা করিবার জন্য অসাধ্য সাধন করিতে প্ৰয়াসী হইয়াছিলেন। সিরাজ তাহার মামাত ভাই পুণিয়ার শাসনকৰ্ত্তা সকৎজঙ্গের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হন। সকৎজঙ্গ হাজি মহম্মদের পৌত্র এবং সৈয়দ মহম্মদের পুত্র। এই যুবকের বুদ্ধির প্রাখৰ্য্য বৃহৎ বঙ্গ/৬০
পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৫৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/1/1e/%E0%A6%AC%E0%A7%83%E0%A6%B9%E0%A7%8E_%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97_%28%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%29_-_%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0_%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A8.pdf/page257-1024px-%E0%A6%AC%E0%A7%83%E0%A6%B9%E0%A7%8E_%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97_%28%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%29_-_%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0_%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A8.pdf.jpg)