পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

A8 বৃহৎ বঙ্গ অনতিক্রিান্ত-কৈশোর বালকের নিন্দাবাদে মুখরিত হইতে লাগিল। হঠাৎ তিনি একদিন দেখিলেন, চারিদিকে কেহই তাহার মিত্ৰ নহেন, ঘেসেটি বেগম হইতে ক্ষুদ্র সৈনিকেরা পৰ্য্যন্ত সকলেই তাহার সর্বনাশের চেষ্টা করিতেছে -এমন কি তঁাহার শ্বশুর। পৰ্য্যন্ত বিপদের দিনে তঁহাকে আশ্রয় দিতে সম্মত হইলেন না। মাত্র মীরমদন প্ৰাণ দিয়া মুমূর্ষুশয্যায় তাহাকে শুনাইয়া গেলেন, তিনি দুধ দিয়া কালসাপ পুষিয়াছিলেন-মাত্ৰ মোহনলাল রণক্ষেত্রে রোষ-কষায়িত নোত্রে মীরজাফরের ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করিয়া অসমর্থ হইয়া প্ৰাণ দিলেন-মাত্র ফরাসী সেনাপতি লাস হতভাগ্য বালক-নবাবের দুঃখে পরম দুঃখ পাইয়া তাহার সহিত মিলিত হইবার বৃথা চেষ্টা করিলেন। আর পলাশীর যুদ্ধ-উহা যুদ্ধ নহে, দৈবের খেলা। যাহারা বিলাসী, অত্যাচারী, স্বেচ্ছাতন্ত্র এবং অলস-তােহাঁদের হাত হইতে ভগবান ঐশ্বৰ্য্যলক্ষ্মীব প্ৰকৃত সেবক, স্বাৰ্থবিস্মৃতি, জাতীয়স্বাৰ্থসৰ্ব্বস্ব, গিরি-সাগর-লতষী, অদম্য-উৎসাহশীল, নবগঠিত, নব-তেজোদৃপ্ত একটি জাতির হাতে এই বিশাল সাম্রাজ্য প্ৰদান করিলেন, পলাশী উপলক্ষমাত্র । উহা রাজলক্ষ্মীব কৌটী-একটা ময়দানে বসিয়া যুদ্ধের ছলে ভাগ্যলক্ষ্মী তাহা তাহাব যোগ্য সন্তানদিগকে দিলেন। মীরজাফর আমাদের জাতীয় চরিত্রের একটা দিকের প্রতীক। শকুনি, জয়চন্দ্ৰ, মীরজাফর প্রভৃতি ব্যক্তির যুগে যুগে অভু্যুদয় হইয়াছে।--ভারতবর্ষ যে এখনও স্বায়ত্তশাসনের যোগ্য হয় নাই, তাহ প্ৰমাণ করিতে। আমাদের রক্তের মধ্যেই মীরজাফর ও জয়চন্দ্র রহিয়াছে— উহা বহুদিনের ব্যাধি । সিরাজউদৌল্লা সিংহাসনে আরোহণ করিয়া কোন নিষ্ঠুরতা করিয়াছেন একথা ইতিহাসের কোথাও নাই, বরঞ্চ সৰ্ব্বত্র তঁহার উদারতার প্রমাণ আছে তিনি হুসেন কুলি খাঁ ও র্তাহার ভ্রাতাকে হত্যা করিয়াছিলেন, উহা সিংহাসনে আরোহণেব পূর্বে - তখন তিনি বালক, এবং এই ব্যাপাবে ঘেসেটি বেগম ও অপরাপর বয়োবৃদ্ধ লোকের বিশেষরূপ হাত ছিল ; তথাপি উহা অতি গহিত কৰ্ম্ম এবং এজন্য যে তিনি কত অনুতপ্ত হইয়াছিলেন, তাহা তাহার মৃত্যুকালীন কাতরোক্তি হইতে জানা যায়। রাজা রাজবল্লাভের পুত্ৰ কৃষ্ণবল্লাভের জন্যই ইংরেজদের সঙ্গে তঁহার বিরোধ হইয়াছিল। সম্ভবতঃ অন্যায় উপায়ে লব্ধ অপরিমিত ঐশ্বৰ্য্য লইয়া রাজবল্লভ ঢাকায় ছিলেন এবং ঘেসেটি বেগমের সহিত সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করিতেছিলেন, তথাপি সিরাজ রাজবল্লভকে কিছু বলেন নাই। কিন্তু মনে পাপ থাকিলে ভিতরে সোয়াস্তি থাকে না। রাজবল্লভ তাহার অর্থের এক বিপুল অংশ রাজা কৃষ্ণবল্লাভের হাতে দিয়া কলিকাতায় ইংরেজদের নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠাইয়াছিলেন। এ অবস্থায় মুল্লকের অধিপতির এই দাবী ন্যায়সঙ্গত, তিনি কৃষ্ণবল্লভকে তঁহার নিকট পঠাইয়া দিতে ড়েক সাহেবকে r চিঠি লিখিলেন, ড্রেক স্বীকৃত হইলেন না। নবাব কলিকাতা দুর্গ দখল করিয়াই ইহাকে তাম্বার সমক্ষে উপস্থিত করিতে বলিলেন। নবাবের আর একজন বিদ্রোহী প্ৰজা ছিলেন উমিচাঁদ। তিনিও ইংরেজের আশ্রয়ে গা ঢাকা দিয়াছিলেন। নবাব जय ख]वश् ।