পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शिक-नौकांद्ध कथाँ QoRAQ9 পূৰ্বপুরুষেরা কোন দেশ হইতে আসিয়াছিলেন বলা যায় না। তঁহাদের মেয়েদের বর্ণ এত ফরসা ও মুখের গড়ন এরূপ যে, তাহারা খাটি বাঙ্গলাদেশের লোক বলিয়া মনে হুইত না । তাহারা যে বাঙ্গলা ভাষায় কথা কহিতেন, তাহাও কতকটা বিদেশী ভাষার মত, কলহের সময়ে তাহারা যে ভাষা ব্যবহার করিতেন, তাহা কিছুতেই বাঙ্গলা বলিয়া মনে হইত না। আমি অৰ্দ্ধ শতাব্দী পূৰ্ব্বে যাহা দেখিয়াছিলাম, তাহাই বলিতেছি। বর্তমান সময়ে ইহারা শিক্ষাদীক্ষায় অনেক পরিমাণে উন্নত হইয়াছেন, কিন্তু কিছু দিন পূর্বেও স্বীয় শিল্পকাৰ্য্যে সুদক্ষ হইয়া বহির্জগতের সঙ্গে কোন সম্বন্ধ রাখিতেন না। ইহারা তখন অতি ক্ষুদ্র গুহার ন্যায় ছোট ছোট বাড়ীতে থাকিতেন এবং সেই সকল বাড়ী ত্রিতল-চৌতাল হইত,— এক একখানি রথের মত দেখাইত। ঢাকার শাখারীবাজার সম্পূর্ণরূপে তাহদের নিজস্ব ছিল-অতি সঙ্কীর্ণ ৩০০ গজ পরিমিত রাস্তার দুই ধারে দ্বিতল, ত্রিতল ও চৌতাল ছোট ছোট ঘরগুলি ; শাখারীদের, বিশেষ তাহদের মেয়েদের অতিশয় ধবধবে শ্বেতবৰ্ণ ; শাখ কাটিবার একরূপ অদ্ভুত লৌহের করাত এবং অপরাপর যন্ত্র, শাখ কাটার সেই একঘেয়ে শব্দ, যাহা লইয়া তামিল কবি তাহার সমালোচককে খৃঃ পূঃ কোন এক শতাব্দীতে ঠাট্টা করিয়াছিলেন, এই সকল বৈশিষ্ট্য লইয়া ঢাকার শাখারী সম্প্রদায়-বহুযুগ যাবৎ ঢাকা কোতিয়ালীর নিকটে বাস করিয়া আসিতেছেন। তঁহাদের প্রত্যেকের বাড়ীতে তখন একটি করিয়া কুপ ছিল ; সেই কুপে স্নান এবং সেই গৃহে আহারাদি সমাপনপূর্বক দিনরাত র্তাহারা भाथ ऊत्री कब्रिटड--ऊँीश्ॉब्रां কদাচিৎ বাহিরে যাইতেন। এরূপ প্ৰবাদ আছে যে যদিও বুড়ীগঙ্গার ঘাট তাহদের গৃহ হইতে অৰ্দ্ধ মাইল মাত্র দূরে, তথাপি অনেক অশীতিপর বৃদ্ধ বুড়ীগঙ্গার ঘাট কোথায় তাহা জানিতেন না। এ সকল প্ৰবাদ অবশ্যই অতিরঞ্জিত, কিন্তু ইহার মূলে এই সত্যটুকু নিহিত যে এই স্বীয়কাৰ্য্যে সম্পূৰ্ণৰূপে নিবিষ্টচিত্ত-সম্প্রদায় বাহিরের জগৎ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ উদাসীন ছিলেন। ঢাকা জেলার দাসীরা গ্রামে ইহাদের এক কেন্দ্র ছিল । ইহারা পুর্বে অতিসূক্ষ্ম কারুকাৰ্য্য করিতে পারিতেন ; রেখাগুলি এরূপ সূক্ষ্মভাবে টানিয়া যাইতেন ও তাহা গালা দিয়া এরূপ সুন্দরভাবে রাজিত করিতেন যে, তখন শাখাগুলি অনাড়ম্বর হইয়াও একান্ত সুরুচি ও সংযত কলার নিদর্শন হইত। এখন নানারূপ কারুকাৰ্য্য তাহাতে ঢুকিয়াছে সত্য, কিন্তু কাজগুলি আর সেরূপ যত্নের সহিত হয় বলিয়া মনে হয় না। এখনকার শাখা বা ; চুড়ি পূর্বের মত সুচারুরূপে কষ্ঠিত হয় না, এখন বাহিরে নানারূপ চিত্তাকর্ষক চিত্র অঙ্কিত থাকে, কিন্তু ভিতরটা উঁচুনীচু ও খুব ভাল ভাবে কাটা হয় না। কিন্তু অৰ্দ্ধশতাব্দী পূর্বের ভাল শাখায় পশ্চাদভাগ নিখুঁতভাবে সমতল হইত। হরনেল সাহেব লিখিয়াছেন, এক সময় ঢাকার শাখার ব্যবসায়টার অবনতি আরম্ভ হইয়াছিল। বিলাতী বেলোয়ারী চুড়ি ও বিদেশী পাট্যারনের গহনার প্রতি অনুরাগের জজ বাজালী ভদ্রঘরের মেয়েরা আর শাখার প্রতি বেশী আকৃষ্ট হইতেন না ; কিন্তু স্বদেশী আরম্ভ হওয়ার পর হইতে মেয়েরা আর বিলাতী চুড়ি পরেন না, আবার শাখার প্রতি আগ্ৰহ বাড়িয়াছে ; এজন্য আবার এই শিল্প জাগিয়া উঠিয়াছে। 33& 32/us