পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণচন্দ্র ও তৎপরবর্তী যুগে বাঙ্গলা-সাহিত্যের অবস্থা X o ed যায়, তবে প্রতি বৎসর অনড় স্বামীকে নড়াইবার চেষ্টা করার দায় হইতে মুক্তি পাওয়া যায়এই যে মেনকারাণীর আর্ত-বাৎসল্য এবং স্নেহ, যাহা কবির মৰ্ম্মান্তিক করুণার সুরে বর্ণনা করিয়াছেন- আগমনীর অতুলনীয় পদ সৃষ্টি করিয়াছেন—তাহা বাঙ্গলার তদানীন্তন শরৎ কালের নিজের সুর। দুর্গোৎসবের সর্বাপেক্ষা করুণ রসের উৎস-মিলনোৎসবের মধ্যে কন্যা-বিরহের জন্য ব্যাকুলা জননীর প্রাণের নিভৃত বিলাপ | এই কবিতাগুলি নাকি উৎকট, কবিওয়ালারা নাকি অতি বীভৎস-অনুপ্ৰাস দোষ-দুষ্ট পদের বিকৃত রুচির পথপ্ৰদৰ্শক-কবি-সম্রাটের এই মন্তব্যের সঙ্গে বাঙ্গলার প্রাণ কখনই সাড়া দিবে না। কবিওয়ালারা যে এই পবিত্র উৎস বহাইয়াছেন, তাহা বাঙ্গলার শুধু পারিবারিক মৰ্ম্মকথার সন্ধান দেয় না-শুধু তাহা হইলে ইহার মূল্য ততটা বেশী হইত না, করুণ রসের উদাহরণস্বরূপ বাঙ্গলার আগমনী গান একটা দীর পাইত এই পৰ্য্যন্ত । কিন্তু উপসংহারে কবিরা যে সকল ইঙ্গিত দিয়া গিয়াছেন, তাহাতে মহেশ্বরের মহিমান্বিত মূৰ্ত্তি বাঙ্গালী-হৃদয় কতটা উপলব্ধি করিয়াছিল--তাহার আভাস পাওয়া যায়। কবি শেষ গানটির সমাপ্তি-বাক্যে বলিতেছেন, “রাণী তুমি বাতুল হইয়াছ, কুবেরের ভাণ্ডার দিয়া যাহাকে বিষ্ণু ভুলাইতে পারেন নাই, যিনি এক মুহুর্তে পারিবারিক জীবনের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া পর মুহুর্তে যোগীশ্বরের মহৈশ্বৰ্য্যপূর্ণ উদ্ধলোকে বিহার করেন, যাহার তপস্যায় যুগ যুগ চলিয়া যায়-দেবতারা যাহার যোগ-নিমগ্ন সমাধিস্থ রূপের কাছে আসিতে ভীত হন, শ্মশানের চিতা হাড়মালা যাহার কাছে কৌষেয় বস্ত্র ও পারিজাত হইতে গ্ৰাহী-সেই চিতাভস্মামোদী, অমৃতহলাহলের বৈষম্য-বিস্মৃত, যোগীশ্বর মহেশ্বরকে তুমি “ঘরজামাই” করিয়া বাধিয়া রাখিতে চাও--যিনি লীলাবশতঃ ক্ষণেকের জন্য ভক্তের কাছে ধরা দেন, তঁহাকে তুমি চিরবন্দী করিতে চাহ, তুমি বাতুল।” সুতরাং দেখা যাইতেছে, বাঙ্গলার অন্তঃপুরের মা শর্মাক্তি ও বাঙ্গালী জীবনের নিগুঢ়-ভাবের প্রস্রবণ হইতে এই আগমনী গানের ধারা বহিয়া আসিয়া শিব-সমাধির স্বৰ্গলোক স্পশ করিয়াছে। র্যাহারা আগমনী গান বুঝেন নাই, তঁহাদের পক্ষে বাঙ্গলাদেশের অষ্টাদশ শতাব্দীর ইতিহাস বুঝিতে বিলম্ব হইবে। আমরা এইখানেই সাহিত্যের ইতিহাস শেষ করিলাম। এই যুগে শব্দ-মন্ত্রের গুরু কয়েক জন কবি জন্মিয়াছিলেন এবং ভাব-মন্ত্রের গুরু কয়েকজন কবি জন্মিয়াছিলেন । তঁহাদের সম্বন্ধে, সংক্ষেপে দুইটি কথা বলিয়া উপসংহার করিব। শব্দ-মন্ত্রে গোপাল উড়ে কত উৎসবের রাত্রিকে যে উজ্জ্বল করিয়াছেন—তাহার ইয়ত্তা নাই। সেই তরল হাস্ত, সে নৃত্য, সেই সকল মিষ্ট কথা, যে দেখিয়াছে শুনিয়াছে-সে জীবনে ভুলিবে না। সেই “ফুল জোগাই কেমন করে J যামিনীতে কামিনীফুল নিত্য নে যায় চোরে।” কথাগুলির সঙ্গে সঙ্গে নৃত্যের তাল ও নুপুরের ধ্বনি মনে পড়ে। “কোথাকার হাবা ছেলে হাসি পায় শুনে, সদায় বলে কই মাসী তুই বিদ্যা দিলিনে-কথায় যেন কমি খোক, রাজকুমারীর সঙ্গে দেখা, মনে একটু হয়না ধোকা, হয়না ভাবনা-আরে, আঁচলে KR KPF/Ve» cशांॉज ऐtए ।