পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S OV8 বৃহৎ বঙ্গ হইলেন। বিদ্রোহীরা তঁহাদের কাহারও কাহারও শিরশেছদ করিল। এমন কি বৃথা প্ৰতিশ্রুতিতে প্ৰলুব্ধ বর্জনা গোহাঁইনও বিদ্রোহিগণ কর্তৃক নিহত হইলেন। বানগান রাজসিংহাসন অধিকার করিতে গেলে—“তঁহার পিতা তঁহাকে নিষেধ করিয়া মোরাণ-দলনেতা নাহারের পুত্র রাঘ এবং তঁহার দুই ভ্রাতাকে সমস্ত আসামের ভিন্ন ভিন্ন অংশ বিভাগ করিয়া প্ৰত্যেককে রাজপদে অভিষিক্ত করিলেন। রাঘ সৰ্বোপরি রাজা হইলেন, কিন্তু বানগানেরই সমস্ত প্ৰভুত্ব রহিল, তিনি “বড় বড়ুয়া” পদে প্রতিষ্ঠিত হইয়া রাজ্য শাসন করিতে লাগিলেন। বানগান লক্ষ্মীসিংহের মহিষী মণ্ডলীকে স্বীয় অন্তঃপুবভুও’ করিয়া লইলেন, তন্মধ্যে মণিপুরের এক রাজকুমারীও ছিলেন। এদিকে লক্ষ্মীসিংহ কারাগাব হইতে কৌশলক্রমে মুক্ত হইয়া অতির্কিতভাবে রাঘকে আক্রমণ করিয়া ১৭৭০ খৃঃ অব্দের এপ্রিল মাসে র্তাহাকে রাজপ্ৰাসাদ হইতে বাহির করিয়া দিলেন এবং সেইখানেই তঁহাকে হত্যা করা হইল। কথিত আছে, অন্তঃপুর হইতে মণিপুরের রাজকন্যা বাহিৰ হইয়া রাঘের শরীবে শেষ খড়গাঘাত করেন। ইহার পবে লক্ষ্মীসিংহ স্বীয় রাজা ফিরিয়া পান। গোসাইয়েব দল কিছুকাল ধরিয়া নির্বাপিত অগ্নির স্মৃলিঙ্গের মত এদিক সেদিক স্বীয় প্রভাব দেখাইতেছিলেন, কিন্তু পরিণামে র্তাহারা বিধ্বস্ত, হইলেন। লক্ষ্মীসিংহের অভিষেক এই সকল বিপ্লবের জন্য স্থগিত ছিল, এবার তাহা ধূমধামেব সহিত সম্পাদিত হইল। লক্ষ্মীসিংহ ঘোর শাক্ত ছিলেন এবং দেবী-মন্দিরে অনেক দান ও পূজাদি কাৰ্য্যোব অনুষ্ঠান কবেন। আমরা ইহার পবের অধ্যায় আব্ব লিখিব না।—কারণ বাঙ্গলাব ইতিহাসও আমরা ১৭৫৭ খৃষ্টাব্দের পর আর লিখি নাই। এইখানে আমরা পরবত্তী বাজগণের বংশতালিকা দিয়া শেষ করিব । গৌরীনাথ সিংহ ১৭৮০-১৭৯৫ খৃঃ, কমলেশ্বর সিংহ ১৭৯৫-১৮১০ খৃঃ, চন্দ্ৰকান্ত সিংহ >ッ>o->ッ>ャ*、*不 f*授 >v>v->いs *: আসামেব রাজাদের কথা বলা হইল, কিন্তু তথাকার রাজচক্ৰবৰ্ত্তীর কথা বলা হয় নাই । যিনি প্ৰায় পাঁচশত বৎসর যাবৎ প্রকৃতই আসাম-বাসীর হৃদয়ের উপর রাজত্ব করিতেছেনএখন পৰ্য্যন্ত র্যাহার রাজত্ব অমোঘ প্ৰতাপে চলিতেছে, যিনি কায়স্থ কুলে সস্তৃত হইয়াও ব্রাহ্মণ এবং সর্ববর্ণের পূজ্য, যিনি ঘোর তান্ত্রিকতা এবং নর-পশু-পক্ষি-রক্ত-কলঙ্কিত রাজ-রাজন্যগণের সহায়তাপুষ্ট দেবীমন্দিবের প্রবলপ্রতাপান্বিত শাক্ত উপাসকদিগের অত্যাচারের মূলে তুলসীপত্রভূষিত, ক্ষমাসুন্দর, দিব্য প্রীতির যাদু-কুঠারাঘাত করিয়াছিলেন, যিনি আমাদেরই চৈতন্যদেবের সমকালবৰ্ত্তী এবং তঁহারই মত সর্ববর্ণের সাম্য-প্রচারক, সেই বৈষ্ণব-চুড়ামণি আসামবাসীর হৃদয়ের অমূল্য-কণ্ঠহার-শঙ্কর দেবের জীবনের পবিত্ৰ প্ৰসঙ্গ দ্বারা আমরা এই অধ্যায়ের উপসংহার করিব। শঙ্কর দেবের পিতা কুসুমবার পরম শৈব ছিলেন, ইহাদের আদিবাসী বটদ্রুবি (নোয়াগায়)। অল্পবয়সে শঙ্করের মাতার মৃত্যু হয়। শৈশবকালে তিনি অতি দুৰ্দান্ত ছিলেন, কিন্তু পিতার ভৎসনায় তাহার চৈতন্য হইল এবং অল্পকালের মধ্যেই তিনি সৰ্ব্বশাস্ত্ৰবিৎ পণ্ডিত হইলেন, তাহার উপাধি হইল “দেবগিরি।” তিনি এতটা যোগাভ্যাস করিয়াছিলেন যে, কথিত আছে,