পাতা:বেণের মেয়ে - হরপ্রসাদ শাস্ত্রী.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্ৰয়োদশ পরিচ্ছেদ “বহারী গোলার দিকে আসিতে লাগিল, আর মহারাজাধিরাজ দক্ষিণসমুদ্রের ‘দকে ভাসিয়া চলিলেন । মায়া স্তন্ধ হইয়া ভাবিতে লাগিল, “এই স্থত কিছু পূর্বে সম্মুখে এক প্ৰকাণ্ড নগর দেখিতেছিলাম, দেখিতে দেখিতে সব কোথায় মিলাইয়া গেল। এখন দেখি,-যে দিকেই দেখি, কেবল জল --কেবল জল । ওপারের গাছপালার রেখামাত্র দেখা যাইতেছে । উপরে কেবল আকাশ, নীচে কেবল জল ।” মায়া এই চিন্তায় নিমগ্ন আছে, এমন সময়ে পিছন দিকে শিশু-কণ্ঠে কে ডাকিল-“মা !” মায়ার ধান ভঙ্গ হইয়া গেল, সে পিছন ফিরিয়া দেখে, তাহার সেই হবু ছেলে দু’হাত তুলিয়া তা’র কোলে উঠিবার জন্য ডাকিতেছে —“মা !” মায় তাহাকে কোলে তুলিয়া লইল । দুই হাতে তাহাকে নাচাইতে লাগিল, আর বার বার চুমা খাইতে লাগিল। সে যত হাসে, মায়া তাত চুমা খায়। তাতার হাসির ও বিরাম নাই, মায়ার চুমারও বিরাম নাই। এমন সময়ে নীচে হইতে জলদ-গম্ভীরস্বরে কে বলিয়া উঠিল—“মা কোথায় গো ?” সে শব্দ কয়েক মাস ধরিয়া শুনিয়া শুনিয়া সুপরিচিত হইয়া গিয়াছে। মায়া ছেলেটিকে এক দাসীর কোলে দিয়া তাড়াতাড়ি নামিয়া গেল । একটা নীচের তলায় একজনের সহিত দেখা হইল । মায়া তাহাকে পঞ্চাঙ্গে প্ৰণাম করিলেন। তিনি আমাদের মস্করী। তিনি বলিলেন, “মা, আজ বোলা বড় অধিক হইয়া গিয়াছে ; বেশীক্ষণ থাকিতে পারিব না । তোমায় কেবল একটি কথা বলিয়া যাই । আসছে। বছর ফান্তন মাসের পূৰ্ণিমায় মহারাজাধিরাজ সাতগাঁয়ে বসিয়া শাস্ত্রে, কাব্যে ও শিল্পকলার পরীক্ষা লইবেন। তােমাকে কাব্য পরীক্ষা দিতে হইবে। আমি শীঘ্ৰ সাতগাঁ ছাড়িয়া যাইব । সকল পণ্ডিত-সমাজেই আমাকে ঘুরিতে তইবে । আমি তাঙ্গাদের সকলকে নিমন্ত্রণ করিয়া আসিব ।” (S