পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
ভানুসিংহের পত্রাবলী

পারে। যখন তাই সে করে তখন তা’র সেই সৃষ্টি মায়ের সৃষ্টির সঙ্গে মিলে স্থিতি লাভ করে। বিশ্বকর্ম্মার কাজে আমরা যখন যোগ দিই তখন যে-পরিমাণে তাঁ’র সঙ্গে মিল রেখে, ছন্দ রেখে চলি সেই পরিমাণে আমদের কাজ অক্ষয়কীর্ত্তি হ’য়ে ওঠে,—যে-পরিমাণে বাধা দিই সেই পরিমাণে আমরা প্রলয়কে ডেকে আনি। নিজের জীবনকে এই প্রলয় থেকে যদি বাঁচাতে চাই তা হ’লে প্রতিদিনই আমি-তুমির ছন্দ মিলিয়ে চ’ল্‌তে হবে—সেই ছন্দেই মানুষের সৃষ্টি, মানুষের ইতিহাস অমরতা লাভ করে। দেখ্‌চো তো, মা আজ পশ্চিমের ঘরে কী রকম প্রলয়ের সম্মার্জ্জনী নিয়ে বেরিয়েচেন। পশ্চিমের সভ্যতা মনে ক’র্‌ছিলো, তা’র শক্তি তা’র নিজেরই ভোগ নিজেরই সমৃদ্ধির জন্যে। সে আমি-তুমির ছন্দকে একেবারে মানেনি। কিছুদূর পর্য্যন্ত সে বেড়ে উঠ্‌লো। মনে ক’র্‌লো সে বেড়েই চ’ল্‌বে— এমন সময়ে ছন্দের অমিল ঘোচাবার জন্যে হঠাৎ একমুহূর্ত্তেই মায়ের প্রলয় অনুচর এসে হাজির। এখন কান্না, আর বক্ষে করাঘাত। ইতি ১৬ই আশ্বিন, ১৩২৫।