পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৭৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৮
ময়ূখ

নয় আমি পাগল হইয়াছি। এ সপ্তগ্রাম নহে ভীমেশ্বর, তুমি ললিতা আমি ময়ূখ। সন্ধ্যা হইয়াছে, চল তোমাকে গৃহে লইয়া যাই, রাধিকা দিদি কোথায় গেল?”

 যুবক পুনরায় শয্যা ত্যাগ করিবার উপক্রম করিল, যুবতী তাহাকে বাহু পাশে আবদ্ধ করিয়া বহু কষ্টে নিবারণ করিল। তখন ফতেমা হকিমপ্রদত্ত ঔষধ সরবতের সহিত মিশ্রিত করিয়া লইয়া আসিল, যুবতীর হস্ত হইতে যুবক তাহা পান করিল ও তৎক্ষণাৎ নিদ্রিত হইয়া পড়িল।

 যুবতী ধীরে ধীরে শয্যাপার্শ্ব হইতে উঠিয়া পার্শ্বে কক্ষে প্রবেশ করিল, সেই স্থানে এক বৃদ্ধ দুগ্ধফেননিভ শয্যার উপরে বসিয়া পত্র লিখিতেছিলেন, তিনি যুবতীকে দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন “কি হইয়াছে মা?” যুবতী কহিল, “কিছু নয়। আপনি কাহাকে পত্র লিখিতেছেন?” “আসদ্‌ খাঁকে। পুত্রকে লইয়া দিল্লী যাইব, ফৌজদার কলিমুল্লা খাঁ পলায়ন করিয়াছে। আসদ্‌ খাঁর অনুমতি লইয়া পুত্রের সহিত দিল্লীতে ফিরিব, সেইজন্য অদ্য রাত্রিতে তাঁহাকে বজরায় আসিতে লিখিলাম।”;

 বৃদ্ধের কথা শুনিয়া যুবতী প্রমাদ গণিল; সে ভাবিল যে যুবক যখন সৈনিক তখন সে নিশ্চয়ই আসদ্‌ খাঁর পরিচিত। আসদ্‌ খাঁ আসিলে বৃদ্ধের নিকট সমস্তই প্রকাশিত হইয়া পড়িবে। গুলরুখ্‌ ব্যস্ত হইয়া কহিল, “পিতা, অদ্য আসদ্‌ খাঁকে পত্র লিখিয়া কাজ নাই, উনি মুক্ত বায়ুর জন্য ব্যস্ত হইয়া পড়িয়া-