পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৭৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
একাদশ পরিচ্ছেদ
৭১

দাঁড়াইয়াছিল, বজরা দেখিয়া সেই ব্রাহ্মণ নৌকার কর্ণধারকে কহিলেন, “ভুবন, এত সেই বজ্‌রা, সপ্তগ্রামে না গিয়া হুগ্‌লীতে আসিল কেন? নিশ্চয়ই ফিরিঙ্গি হার্ম্মাদের নিকট বন্দী হইয়াছে।” ভুবন কহিল, “ঠাকুর, পথে ত ফিরিঙ্গির ছিপ্‌ বা কোশা দেখিতে পাইলাম না?” “হয়ত অন্ধকারে লুকাইয়া গিয়াছে। ভুবন বজরা মার।”

 “সহসা ষাটজন বলিষ্ঠ ধীবর একসঙ্গে দাঁড় ফেলিল,.নৌকার আরোহিগণ একলম্ফে বজ্‌রার উপরে গিয়া পড়িল। ফিরিঙ্গিগণ সতর্ক ছিল না; তাহারা অনায়াসে বন্দী হইল। তখন ভুবন উচ্চৈঃস্বরে কহিল, “বজ্‌রার মুখ ফিরাইয়া দে, সপ্তগ্রামে যাইবে।” তাহার কণ্ঠস্বর শুনিয়া বজ্‌রার অভ্যস্তর হইতে সেই আহত যুবক ডাকিল, “ভুবন?” সে স্বর শ্রবণ করিয়া ভুবনের সমস্ত দেহ কম্পিত হইল, সে আবেগরুদ্ধকণ্ঠে উত্ত দিল, “মহারাজ, যাই।”

 সহসা দুর্গের উপরে বিশাল অগ্নিকুণ্ড জ্বলিয়া উঠিল, তীব্র আলোকে নদীবক্ষ উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল, ভীষণ শব্দে দুই তিনটি তোপ গর্জ্জিয়া উঠিল। আলোক নিবিয়া গেল, সঙ্গে সঙ্গে বজরা ও নৌকা গঙ্গাগর্ভে নিমগ্ন হইল। তখন চারিদিক হইতে পাঁচ সাত খানি ছিপ্‌ আসিয়া আরোহী ও নাবিকগণকে বন্দী করিল।