পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
মানুষের ধর্ম্ম

দেশের গৌরব সমুজ্জ্বল। যে-সব দেশবাসী অতীত কালের, তাঁরা বস্তুত বাস করতেন ভবিষ্যতে। তাঁদের ইচ্ছার গতি কর্ম্মের গতি ছিল আগামী কালের অভিমুখে। তাঁদের তপস্যার ভবিষ্যৎ আজ বর্ত্তমান হয়েচে আমাদের মধ্যে, কিন্তু আবদ্ধ হয়নি। আবার আমরাও দেশের ভবিষ্যতের জন্য বর্ত্তমানকে উৎসর্গ করচি। সেই ভবিষ্যৎকে ব্যক্তিগতরাপে আমরা ভোগ করব না। যে তপস্বীরা অন্তহীন ভবিষ্যতে বাস করতেন, ভবিষ্যতে যাঁদের আনন্দ, যাঁদের আশা, যাঁদের গৌরব, মানুষের সভ্যতা তাঁদেরই রচনা। তাঁদেরই স্মরণ করে মানুষ আপনাকে জেনেচে অমৃতের সন্তান, বুঝেচে যে, তার দৃষ্টি, তার সৃষ্টি, তার চরিত্র মৃত্যুকে পেরিয়ে। মৃত্যু মধ্যে গিয়ে যাঁরা অমৃতকে প্রমাণ করেচেন তাঁদের দানেই দেশ রচিত। ভাবীকালবাসীরা, শুধু আপন দেশকে নয়, সমস্ত পৃথিবীর লোককে অধিকার করেচেন। তাঁদের চিন্তা, তাদের কর্ম্ম, জাতিবর্ণনির্ব্বিচারে সমস্ত মানুষের। সবাই তাঁদের সম্পদের উত্তরাধিকারী। তাঁরাই প্রমাণ করেন সব মানুষকে নিয়ে সব মানুষকে অতিক্রম করে সীমাবদ্ধ কালকে পার হয়ে এক-মানুষ বিরাজিত। সেই মানুষকেই প্রকাশ করতে হবে, শ্রেষ্ঠ স্থান দিতে হবে বলেই মানুষের বাস দেশে। অর্থাৎ এমন জায়গায় যেখানে প্রত্যেক মানুষের বিস্তার খণ্ড