পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
মানুষের ধর্ম্ম

উপনিষদ বলেন, মনসো জবীয়ো নৈনদ্দেবা আপ্নুবন্‌ পুর্ব্বমর্ষৎ। তিনি মনকে ইন্দ্রিয়কে ছাড়িয়ে চলে গেছেন। ছাড়িয়ে যদি না যেতেন তবে পদে পদে মানুষও আপনাকে ছাড়িয়ে যেত না। অথর্ব্ববেদ বলেচেন এই আরোর দিকে, এই ছাড়িয়ে যাবার দিকে মানুষের শ্রী, তার ঐশ্বর্য্য, তার মহত্ত্ব।

 তাই মানবদেবতার সম্বন্ধে এই কথা শুনি:—


যদ্‌ যদ্‌ বিভূতিমৎ সত্ত্বং শ্রীমদ্‌ ঊজ্জিতমেব বা
তত্তদেবাবগচ্ছ ত্বং মম তেজোঽংশসম্ভবম্‌।

যা কিছুতে ঐশ্বর্য্য আছে, শ্রী আছে, শ্রেষ্ঠতা আছে সে আমারই তেজের অংশ থেকে সম্ভূত।

 বিশ্বে ছোটো বড়ো নানা পদার্থই আছে। থাকামাত্রের যে দাম তা সকলের পক্ষেই সমান। নিছক অস্তিত্বের আদর্শে মাটির ঢেলার সঙ্গে পদ্মফুলের উৎকর্ষ অপকর্ষের ভেদ নেই। কিন্তু মানুষের মনে এমন একটি মূল্যভেদের আদর্শ আছে, যাতে প্রয়োজনের বিচার নেই, যাতে আয়তনের বা পরিমাণের তৌল চলে না। মানুষের মধ্যে বস্তুর অতীত একটি অহৈতুক পূর্ণতার অনুভূতি আছে, একটা অন্তরতম সার্থকতার বোধ। তাকেই সে বলে শ্রেষ্ঠতা। অথচ এই শ্রেষ্ঠতাসম্বন্ধে মতের