পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৮৭

《: 인 কথা এই যে, আমার পূর্বেই কৃত্তিবাস নামক আর এক বাঙালী কবি তাঁর চোর অপবাদ স্পষ্ট ভাষায় রটনা করেচেন, আমার অপরাধ তার চেয়ে গুরুতর নয় | হঠাৎ মনে হতে পারে রামায়ণটা রূপক কথা। বিশেষত যখন দেখি রাম রাবণ দুই নামের দুই বিপরীত অর্থ। রাম হল আরাম, শান্তি । আর রাবণ হ’ল চীৎকার, অশান্তি । একটি বনের ছায়া, পল্লবের মৰ্ম্মর, আরেকটিতে শানবাঁধানো রাস্তা আর জয়যাত্রার রথে যন্ত্ৰদানবের বীভৎস শৃঙ্গ ধ্বনি। কিন্তু তৎসত্ত্বেও রামায়ণ রূপক কথা নয়। আমার পালাটিও রূপক নাট্য নয়। রামায়ণ মুখ্যত মানুষের সুখদুঃখ ভালোমন্দ নিয়ে বিরোধের কথা। কতকগুলি গুণকে মানুষের মুখোশ পরিয়ে কোনো কৃত্রিম কাহিনী রচে দেওয়া নয়। সে বিরোধ একদিকে ব্যক্তিগত মানুষের, আরেকদিকে শ্রেণীগত মানুষের। রাম ও রাবণ একদিকে দুইজন মানুষ, আরেকদিকে দুই শ্রেণীর মানুষ। আমার নাটকও ব্যক্তিগত মানুষেরই একান্ত সুখদুঃখের কথা, অথচ এর মধ্যে শ্রেণীগত মানুষকেও দেখা যায় | ভূমিকা একটু বড়ো হল তার থেকে প্রমাণ হচ্ছে বারোয়ারির প্রবীণদের আমি ভয় করি। তাঁরা যখন কাব্য না বুঝতে পারেন তখন নিজের বুদ্ধিকে নিন্দা করেন না, নিন্দা করেন কবিকে । এইজন্যে কিছু বেশি করে বলতে হল, কিন্তু সেটাও হয়ত ভুল করলুম, কারণ, কথার পরিমাণ যতই বেশি হবে, না বোঝার পরিমাণও ততই বেশি হতে পারে । [“এইবার প্রণিধান করুন— ঐ দেখুন, যক্ষপুরীর রাজার জানলার বাইরে নন্দিনী এসে ডাকাডাকি করচে। অদ্ভুত এই জানলা, জালের তৈরি । এর ভিতরকার রহস্য বাইরের লোকে কিছুই জানে না। নাট্যের ঘটনাটি যতটুকু দেখা যাচ্চে সমস্তই এই জালের জানলার বাইরে ”] শেষের অনুচ্ছেদটি কেটে দিয়ে বর্জন করা হয়েছে। ৪ ‘রক্তকরবী'র বিভিন্ন সংস্করণ ও মুদ্রণ ক. পাণ্ডুলিপি থেকে রক্তকরবী রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় -সম্পাদিত ‘প্রবাসী-র আশ্বিন ১৩৩১-এ ক্রোড়পত্র’ রূপে সর্বপ্রথম মুদ্রিত আকারে প্রকাশিত হয়। পৃষ্ঠাসংখ্যা ৮৮ ৷ খ. রক্তকরবী । শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিশ্বভারতী গ্রন্থালয়, ২১৭ কর্ণওয়ালিস স্ট্রীট। কলিকাতা। প্রকাশক রায়সাহেব জগদানন্দ রায় । প্রথম সংস্করণ, ১৩৩৩ সাল । পৃষ্ঠাসংখ্যা v - ১০৩ । ‘প্রবাসীর পাঠ অনুসরণে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত এই প্রথম সংস্করণে প্রস্তাবনা শীর্ষক কবির অভিভাষণটি অন্তর্ভুক্ত হয়। কবির অভিভাষণ বা ‘প্রস্তাবনা ‘প্রবাসী পত্রিকার বৈশাখ, ১৩৩২ (২৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড) সংখ্যায় (‘রক্তকরবী/স্ত্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) প্রকাশিত হয়েছিল। এই প্রস্তাবনার পাণ্ডুলিপিই নির্মলকুমারী মহলানবিশের সংগ্রহে থেকে যায়। রবীন্দ্রনাথের জীবৎকালে ‘রক্তকরবী'র এই একটিমাত্র সংস্করণই প্রকাশিত হয় । গ. রক্তকরবী । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিশ্বভারতী গ্রন্থালয়, ২ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ©ፄ