পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রৰীক্স-রচনাবলী م88b কিন্তু এ-জানার শেষ হইবে কবে ? কবে নিশ্চয় জানিব ক্রুজেড সম্বন্ধে সমস্ত প্রমাণ নিঃশেষ হইয়া গেছে। কেমন করিয়া বুঝিব অস্ত ষে ঐতিহাসিক সত্য ধ্রুব বলিয়া জানিব, কল্য নুতনাবিষ্কৃত দলিলের জোরে তাহাকে ঐতিহাসিক সিংহাসন হইতে বিচ্যুত হইতে হইবে না ? অস্তকার প্রচলিত ইতিহাসের উপর নির্ভর করিয়া যিনি ঐতিহাসিক উপন্যাস লিখিবেন, কল্যকার নূতন ইতিহাসবেত্তা তাহাকে নিলা করিলে কী বলিব ? প্রতিবাদী বলিবেন, সেইজন্তই বলি, উপন্যাস যত ইচ্ছা লেখে। কিন্তু ঐতিহাসিক উপন্যাস লিখিয়ে না। এমন কথা আজিও এ-দেশে কেহ তোলেন নাই বটে, কিন্তু ংরেজি সাহিত্যে এ-আভাস সম্প্রতি পাওয়া গেছে । সার ফ্রান্সিস প্যালগ্রেভ বলেন, ঐতিহাসিক উপন্যাস যেমন একদিকে ইতিহাসের শক্র তেমনি অন্যদিকে গল্পেরও মন্ত রিপু। অর্থাৎ উপন্যাসলেখক গল্পের খাতিরে ইতিহাসকে আঘাত করেন, আবার সেই আহত ইতিহাস র্তাহার গল্পকেই নষ্ট করিয়া দেয়,—ইহাতে গল্প-বেচারার শ্বশুরকুল পিতৃকুল দুই কুলই মাটি । এমন বিপদ সত্ত্বেও কেন ঐতিহাসিক কাব্য-উপঙ্গাস সাহিত্যে স্থান পায় ? আমরা তাহার যে-কারণ মনে জানি সেটা ব্যক্ত করিবার চেষ্টা করি । 杞 আমাদের অলংকারশাস্ত্রে রসাত্মক বাক্য বলিয়া কাব্যের যে-সংজ্ঞা নির্দেশ করা হইয়াছে, তাহা অপেক্ষা সংক্ষিপ্ত অথচ ব্যাপক সংজ্ঞা আর কোথাও দেখি নাই । অবশু, রস কাহাকে বলে সে আর বুঝাইবার জো নাই। যে-কোনো ব্যক্তির আস্বাদনশক্তি আছে রস শব্দের ব্যাখ্য' তাহার নিকট অনাবশ্যক ; যাহার ওই শক্তি নাই তাহার এ-সমস্ত কথা জানিবার কোনো প্রয়োজনই নাই । আমাদের অলংকারে নয়টি মূলরসের নামোল্লেখ আছে । কিন্তু অনেকগুলি অনির্বচনীয় মিশ্ররস আছে অলংকারশাস্ত্রে তাহার নামকরণের চেষ্ট হয় নাই । সেই সমস্ত অনির্দিষ্টরসের মধ্যে একটিকে ঐতিহাসিক রস নাম দেওয়া যাইতে পারে। এই রস মহাকাব্যের প্রাণস্বরূপ । ব্যক্তিবিশেষের স্থখদুঃখ তাহার নিজের পক্ষে কম নহে, জগতের বড়ো বড়ো ঘটনা তাহার নিকট ছায়ায় পড়িয়া যায়, এইরূপ ব্যক্তিবিশেষের অৰ্থৰ গুটিকতক জীবনের উত্থানপতন-ঘাতপ্রতিঘাত উপন্যাসে তেমন করিয়া বর্ণিত হইলে রসের তীব্রতা বাড়িয়া উঠে ; এই রসাবেশ আমাদিগকে অত্যস্ত নিকটে আসিয়া আক্রমণ করে। আমাদের অধিকাংশেরই মুখদু:খের পরিধি সীমাবদ্ধ আমাদের জীবনের তরঙ্গক্ষোভ কয়েকজন আত্মীয়বন্ধুবান্ধবের মধ্যেই অবসান হয় । বিষবৃক্ষে নগেন্স