পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫৫

প্রজাপতির নির্বন্ধ ుర్సీలీ ইতস্তত করিতেছে দেখিয়া বলিলেন, “বিলক্ষণ ! আমার সামনে আবার লজ্জা ! সাত বছর বয়স থেকে লুকিয়ে তামাক খেয়ে পেকে উঠেছি। ধোওয়া লেগে লেগে বুদ্ধিতে ঝুল পড়ে গেল ! লজ্জা যদি করতে হয় তা হলে আমার তো আর ভদ্রসমাজে মুখ দেখাবার জে থাকে না।” 壟 তখন সাহস পাইয়া দারুকেশ্বর মৃত্যুঞ্জয়ের হাত হইতে ফস করিয়া নল কাড়িয়া লইয়া ফৰ্ড ফৰ্ড শৰে টানিতে আরম্ভ করিল। অক্ষয় পকেট হইতে কড়া বৰ্মা চুরোট বাহির করিয়া মৃত্যুঞ্জয়ের হাতে দিলেন। যদিচ তাহার চুরোট অভ্যাস ছিল না, তবু সে সদ্যস্থাপিত ইয়ার্কির খাতিরে প্রাণের মায়া পরিত্যাগ করিয়া মৃদুমন্দ টান দিতে লাগিল এবং কোনো গতিকে কাসি চাপিয়া রাখিল । অক্ষয় কহিলেন, “এখন কাজের কথাটা শুরু করা যাক। কী বলেন ?” মৃত্যুঞ্জয় চুপ করিয়া রহিল, দারুকেশ্বর বলিল, “তা নয় তো কী ? শুভস্ত শীঘ্ৰং !” বলিয়৷ হাসিতে লাগিল, ভাবিল, ইয়ার্কি জমিতেছে । তখন অক্ষয় গম্ভীর হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “মুর্গি না মটন!” মৃত্যুঞ্জয় অবাক হইয়া মাথা চুলকাইতে লাগিল। দারুকেশ্বর কিছু না বুঝিয়, অপরিমিত হাসিতে আরম্ভ করিল। মৃত্যুঞ্জয় ক্ষুব্ধ লজ্জিত হইয়া ভাবিতে লাগিল, এর দুজন তো বেশ জমাইয়াছে, আমিই নিরেট বোকা । অক্ষয় কহিলেন, “অারে মশায়, নাম শুনেই হাসি ! তা হলে তো গন্ধে অজ্ঞান এবং পাতে পড়লে মারাই যাবেন! ত, যেটা হয় মন স্থির করে বলুন— মুর্গি হবে ন। মটন হবে ?” তখন দুজনে বুঝিল, আহারের কথা হইতেছে। ভীরু মৃত্যুঞ্জয় নিরুত্তর হইয়। ভাবিতে লাগিল । দারুকেশ্বর লীলায়িত রসনায় এক বার চারি দিকে চাহিয়া দেখিল । অক্ষয় কহিলেন, “ভয় কিসের মশায় ? নাচতে বসে ঘোমটা ?” শুনিয়া দারুকেশ্বর দুই হাতে দুই পা চাপড়াইয়া হাসিতে লাগিল। কহিল, “ত, মুগিই ভালো, কট্‌লেট ! কী বলেন ?” লুব্ধ মৃত্যুঞ্জয় সাহস পাইয়। বলিল, “মটনটাই বা মন্দ কী ভাই! চপ—” বলিয়া আর কথাটা শেষ করিতে পারিল না । অক্ষয়। ভয় কী দাদা, দুই হবে! দোমনা করে খেয়ে স্থখ হয় না। চাকরকে ভাকিয়া বলিলেন, "ওরে, মোড়ের মাথায় যে হোটেল আছে সেখান থেকে কলিমন্দি খানসামাকে ডেকে আন দেখি ” *