পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

रेbr२ রবীন্দ্র-রচনাবলী চন্দ্রবাৰু প্রবেশ করিয়া কহিলেন, "আজকের তর্কবিতর্কের উত্তেজনায় পূর্ণবাবুর হঠাৎ শরীর খারাপ হল দেখে আমি তাকে উীর বাড়ি পৌছে দেওয়া উচিত বোধ করলুম।” 意 ঐশ বিপিনের মুখের দিকে চাহিয়া ঈষৎ একটু হাসিল ; বিপিন গভীরমুখে কহিল, “পূর্ণবাবুর ষে রকম দুর্বল অবস্থা দেখছি পূর্ব হতেই তার বিশেষ সাবধান হওয়া উচিত ছিল।” : চন্দ্রমাধব সরলভাবে উত্তর করিলেন, “পূর্ণবাবুকে তো বিশেষ অসাবধান বলে বোধ হয় না।” চন্দ্রমাধববাবু সভাপতির আসন গ্রহণ করিবার পূর্বেই অক্ষয় রসিকদাদাকে সঙ্গে লইয়া ঘরে প্রবেশ করিলেন। কহিলেন, “মাপ করবেন, এই নবীন সভ্যটিকে আপনাদের হাতে সমর্পণ করে দ্বিয়েই আমি চলে যাচ্ছি।” রসিক হাসিয়া কহিলেন, “আমার নবীনতা বাইরে থেকে বিশেষ প্রত্যক্ষগোচর নয়— অক্ষয়। অত্যন্ত বিনয়বশত সেটা বাহ প্রাচীনতা দিয়ে ঢেকে রেখেছেন, ক্রমশ পরিচয় পাবেন । ইনি হচ্ছেন সার্থকনাম ঐরসিক চক্রবর্তী । শুনিয়া ঐশ ও বিপিন সহাস্তে রসিকের মুখের দিকে চাহিল ; রসিকদাদা কহিলেন, “পিতা আমার রসবোধ সম্বন্ধে পরিচয় পাবার পূর্বেই রসিক নাম রেখেছিলেন, এখন পিতৃসত্য পালনের জন্ত আমাকে রসিকতার চেষ্টা করতে হয়, তার পরে যত্বে কৃতে যদি ন সিধ্যতি কোইত্র দোষ?” ।” অক্ষয় প্রস্থান করিলেন। ঘরে দুটি কেরোসিনের দীপ জলিতেছে ; সেই দুটিকে বেষ্টন করিয়া ফিরোজ রঙের রেশমের অবগুণ্ঠন। সেই আবরণ ভেদ করিয়া ঘরের আলোটি মৃদ্ধ এবং রঙিন হইয়া উঠিয়াছে। পুরুষবেশী শৈল আসিয়া সকলকে নমস্কার করিল। ক্ষীণদৃষ্টি চন্দ্রমাধববাৰু ঝাপসাভাবে তাহাকে দেখিলেন– বিপিন ও ঐশ তাহার দিকে চাহিয়া রহিল। শৈলের পশ্চাতে দুই জন ভৃত্য কয়েকটি ভোজনপাত্র হাতে করিয়া উপস্থিত হইল। শৈল ছোটো ছোটো রুপার থালাগুলি লইয়া সাদা পাথরের টেবিলের উপর সাজাইতে লাগিল। প্রথম পরিচয়ের দুৰ্নিবার লজ্জাটুকু সে এইরূপ আতিথ্যব্যাপারের মধ্যে ঢাকিয়া লইবার চেষ্টা করিল। রসিক কহিলেন, “ইনি আপনাদের সভার আর একটি নবীন সত্য। এর নবীনতা সম্বন্ধে কোনো তর্ক নেই। ঠিক আমার বিপরীত। ইনি বুদ্ধির প্রবীণত বাহ