পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গুরু 'లరి আচার্য । শোনো, প্রয়োজন নেই। উপাধ্যায়। কিসের প্রয়োজন নেই। আচার্য। প্রায়শ্চিত্তের । মহাপঞ্চক। প্রয়োজন নেই বলছেন ! আধিকর্মিক বর্ষায়ণ খুলে আমি এখনই দেখিয়ে দিচ্ছি— আচার্য। দরকার নেই—সুভদ্রকে কোনো প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে না, আমি আশীৰ্বাদ করে তার— মহাপঞ্চক। এও কি কখনো সম্ভব হয় । যা কোনো শাস্ত্রে নেই আপনি কি তাই— আচার্য । না, হতে দেব না, যদি কোনো অপরাধ ঘটে সে আমার । তোমাদের ভয় নেই । উপাধ্যায়। এ রকম দুর্বলতা তে আপনার কোনোদিন দেখি নি। এই তো সেবার অষ্টাঙ্গগুদ্ধি উপবাসে তৃতীয় রাত্রে বালক কুশলশীল জল জল করে পিপাসায় প্রাণত্যাগ করলে কিন্তু তবু তার মুখে যখন এক বিন্দু জল দেওয়া গেল না, তখন তে আপনি নীরব হয়ে ছিলেন। তুচ্ছ মানুষের প্রাণ আজ আছে কাল নেই, কিন্তু সনাতন ধর্মবিধি তো চিরকালের । সুভদ্রকে লইয়া পঞ্চকের প্রবেশ পঞ্চক । ভয় নেই সুভদ্ৰ, তোর কোনো ভয় নেই—এই শিশুটিকে অভয় দাও প্রভু । আচার্য । বৎস, তুমি কোনো পাপ কর নি। যারা বিনা অপরাধে তোমাকে হাজার হাজার বৎসর ধরে মুখ বিকৃত করে ভয় দেখাচ্ছে, পাপ তাদেরই। এস পঞ্চক। [ সুভদ্রকে কোলে লইয়া পঞ্চকের সঙ্গে প্রস্থান উপাধ্যায়। এ কী হল উপাচার্যমশায় ? [ উপাচার্যের প্রস্থান মহাপঞ্চক। আমরা অশুচি হয়ে রইলুম, আমাদের যাগযজ্ঞ ব্ৰত-উপবাস সকলই পণ্ড হতে থাকল, এ তো সহ করা শক্ত । উপাধ্যায়। এ সহ করা চলবেই না । আচার্য কি শেষে আমাদের স্নেচ্ছের সঙ্গে সমান করে দিতে চান ? 潘 মহাপঞ্চক। উনি আজ সুভদ্রকে বাচাতে গিয়ে সনাতন ধর্মকে বিনাশ করবেন! এ কী রকম বুদ্ধিবিকার ওঁর ঘটল ? এ অবস্থায় ওঁকে আচার্য বলে গণ্য করাই চলবে না ।