পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨૭ রবীন্দ্র-রচনাবলী ছেলের। ( দূরে ছুটিয়া গিয়া হাততালি দিয়া ) ওরে লক্ষ্মীপেঁচা বেরিয়েছে রে, লক্ষ্মীপেচা বেরিয়েছে। লক্ষেশ্বর। হনুমন্ত সিং, ওদের কান পাকড়ে আন তো ; একটাকেও ছাড়িস নে । ঠাকুরদাদার প্রবেশ ঠাকুরদাদা। কী হয়েছে লখাদাদা । মার-মূর্তি কেন ? লক্ষেশ্বর । আরে দেখো না ! সকাল বেলা কানের কাছে চেঁচাতে আরম্ভ করেছে। ঠাকুরদাদা। আজ যে শরতে ওদের ছুটি, একটু আমোদ করবে না ? গান গাইলেও তোমার কানে খোচা মারে ! হায় রে হায়, ভগবান তোমাকে এত শাস্তিও দিচ্ছেন ! লক্ষেশ্বর । গান গাবার বুঝি সময় নেই! আমার হিসাব লিখতে ভুল হয়ে যায় যে । আজ আমার সমস্ত দিনটাই মাটি করলে ! ! ঠাকুরদাদা । তা ঠিক ! হিসেব ভুলিয়ে দেবার ওস্তাদ ওরা। ওদের সাড় পেলে আমার বয়সের হিসাবে প্রায় পঞ্চাশ পঞ্চায় বছরের গরমিল হয়ে যায়। ওরে বাদরগুলো আয় তো রে! চল তোদের পঞ্চাননতলার মাঠটা ঘুরিয়ে আনি । যাও দাদা, তোমার দপ্তর নিয়ে বসে গে । আর হিসেবে ভুল হবে না । [ লক্ষেশ্বরের প্রস্থান ঠাকুরদাদাকে ঘিরিয়া ছেলেদের নৃত্যু প্রথম । ই ঠাকুরদা চলো । দ্বিতীয় । আমাদের আজ গল্প বলতে হবে। তৃতীয় । না গল্প না, বটতলায় বসে আজ ঠাকুরদার পাচালি হবে । চতুর্থ। বটতলায় না, ঠাকুরদা আজ পারুলডাঙায় চলো । ঠাকুরদাদা। চুপ, চুপ, চুপ। অমন গোলমাল লাগাস যদি তো লখাদাদা আবার ছুটে আসবে। লক্ষেশ্বরের পুনঃপ্রবেশ লক্ষেশ্বর। কোন পোড়ারমুখে আমার কলম নিয়েছে রে । [ ছেলেদের লইয়া ঠাকুরদাদার প্রস্থান উপনন্দের প্রবেশ । লক্ষেশ্বর। কী রে তোর প্রভু কিছু টাকা পাঠিয়ে দিলে ? অনেক পাওনা বাকি । উপনন্দ। কাল রাত্রে আমার প্রস্তুর মৃত্যু হয়েছে। লক্ষেশ্বর। মৃত্যু! মৃত্যু হলে চলবে কেন । আমার টাকাগুলোর কী হবে ?