পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাস্তিনিকেতন +. sче § আমাদের অন্তর-প্রকৃতির মধ্যে একটি নারী রয়েছেন। আমরা তার কাছে । আমাদের সমুদয় সঞ্চয় এনে দিই। আমরা ধন এনে বলি এই নাও। খ্যাতি এনে বলি এই তুমি জমিয়ে রাখে । আমাদের পুরুষ সমস্ত জীবন প্রাণপণ পরিশ্রম করে কতদিক থেকে কত কী যে আনছে তার ঠিক নেই—ন্ত্রীটিকে বলছে এই নিয়ে ভূমি ঘর ফঁাদে, বেশ গুছিয়ে ঘরকল্প করে, এই নিয়ে তুমি মুখে থাকে। আমাদের অন্তরের তপস্বিনী এখনও স্পষ্ট করে বলতে পারছে না যে, এ সবে আমার কোনো ফল হবে না, সে মনে করছে হয়তো আমি যা চাচ্ছি তা বুঝি এইই । কিন্তু তৰু সব নিয়েও সব পেলুম বলে তার মন মানছে না। সে ভাবছে হয়তে পাওয়ার পরিমাণটা আরও বাড়াতে হবে—টাক আরও চাই, খ্যাতি আরও দরকার, ক্ষমতা আরও না হলে চলছে না । কিন্তু সেই আরও-র শেষ হয় না । বস্তুত সে ষে অমৃতই চায় এবং এই উপকরণগুলো যে অমৃত নয় এটা একদিন তাকে বুঝতেই হবে— একদিন একমুহূর্তে সমস্ত জীবনের কৃপাকার সঞ্চয়কে এক পাশে আবর্জনার মতে ঠেলে দিয়ে তাকে বলে উঠতেই হবে—ষেনাহং নামৃত স্তাম্ কিমহং তেন কুর্ষাম! কিন্তু মৈত্রেয়ী ওই যে বলেছিলেন, আমি যাতে অমৃত না হব তা নিয়ে আমি কী করব, তার মানেট কী। অমর হওয়ার মানে কি এই পার্থিব শরীরটাকে অনন্তকাল বহন করে চলা । অথবা মৃত্যুর পরেও কোনোরূপে জন্মান্তরে বা অবস্থাস্তরে টিকে থাকা ? মৈত্রেী যে শরীরের অমরত চান নি এবং আত্মার নিত্যত সম্বন্ধেও তার কোনো দুশ্চিন্তা ছিল না এ-কথা নিশ্চিত। তবে তিনি কীভাবে অমৃতা হতে চেয়েছিলেন । তিনি এই কথা বলেছিলেন, সংসারে আমরা তো কেবলই একটার ভিতর দিয়ে আর একটাতে চলেছি—কিছুতেই তো স্থির হয়ে থাকতে পারছি নে। আমার মনের বিষয়গুলোও সরে যায় আমার মনও সরে যায়। ষাকে আমার চিত্ত অবলম্বন করে তাকে যখন ছাড়ি তখন তার সম্বন্ধে আমার মৃত্যু ঘটে। এমনি করে ক্রমাগত এক মৃত্যুর ভিতর দিয়ে আর মৃত্যুতে চলেছি-এই যে মৃত্যুর পর্যায় এর আর অস্ত নেই। " 。 潮 唱 q অথচ আমার মন এমন কিছুকে চায় ষার থেকে তাকে আর নড়তে হবে ন – যেটা পেলে সে বলতে পারে এ-ছাড়া আমি আর বেশি চাই নে—ৰাকে পেলে, আর ছাড়া-ছাড়ির কোনো কথাই উঠবে না। তাহলেই তো মৃত্যুর হাত একেবারে এড়ানো যায়। এমন কোন মাছুষ এমন কোন উপকরণ আছে যাকে