পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন , , 1. ( తర তার গান, আমায় পার করো—যখন সে বলতে পারে, তোমার কর্ম, তখন সে পার হয়ে গেছে । আমার ঘরকে তোমার ঘর করব, আমার কর্মকে তোমার কর্ম করব তবেই তো আমাতে তোমাতে মিল হবে । আমার ঘর ছেড়ে তোমার ঘরে যাব, আমার কর্ম ছেড়ে তোমার কর্মে যাব এ-কথা আমাদের প্রাণের কথা নয় । কেননা, এও যে বিচ্ছেদের কথা । ষে-আমির মধ্যে ভূমি নেই, আর যে-তুমির মধ্যে আমি নেই দুইই আমার পক্ষে সমান । এইজন্তেই আমাদের ঘরের মাঝখানেই, আমাদের কাজকর্ষের হাটের মধ্যেই দিনরাত রব উঠছে, হরি আমায় পার করে । এইখানেই সমুদ্র, এইখানেই পার । X > পৌষ এপার ওপার যার সঙ্গে আমার সামান্ত পরিচয় আছে মাত্র সে আমার পাশে বসে থাকলেও তার আর আমার মাঝখানে একটি সমুদ্র পড়ে থাকে—সেটি হচ্ছে অচৈতন্তের সমুদ্র, ঔদাসীন্তের সমুদ্র । যদি কোনোদিন সেই লোক আমার প্রাণের বন্ধু হয়ে ওঠে তখনই সমুদ্র পার হয়ে যাই । তখন আকাশের ব্যবধান মিথ্যা হয়ে যায়, দেহের ব্যবধানও ব্যবধান থাকে না, এমন কি, মৃত্যুর ব্যবধানও অন্তরাল রচনা করে না । ষে অহংকার আমাদের পরস্পরের চারদিকে পাচিল তুলে পরম্পরকে অতিনিকটেও দূর করে রাখে, সে ধার জন্তে পথ ছেড়ে দেয় সেই আমাদের আপন হয়ে ওঠে। সেইজন্তে কাল বলেছিলুম সমুদ্র পার হওয়া কোনো একটা মুদূরে পাড়ি দেবার ব্যাপার নয়, সে হচ্ছে কাছের জিনিসকেই কাছের করে নেওয়া । বস্তুত আমাদের যত কাছের জিনিস যত দূরে রয়েছে তার দূরত্বটাও ততই ভয়ানক । এই কারণেই, আমরা আত্মীয়কে যখন পর করি তখন পরের চেয়ে তাকে বেশি পর করি। যার ঘনিষ্ঠ সংস্ৰৰে আছি তাকে যখন অনুভবমাত্র করি নে তখন সেই অসাড়ত মৃত্যুর অসাড়তার চেয়ে অনেক বেশি। এই কারণেই, জগতের সকলের চেয়ে যিনি অন্তরতম তাকেই যখন দূর বলে জানি তখন তিনি জগতের সকলের চেয়ে দূরে গিয়ে পড়েন-ৰিনি আমাদের প্রাণের প্রাণ তিনি ওই স্কুল দেয়ালের চেয়ে দূরে দাঙ্গন-সংসারে তখন এমন কোনো দূরত্ব নেই 8و6سسوR' « .